পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮০
বিদ্যাসাগর।

অন্তরায় দুরীকৃত হইতে পারে, মাইকেলের এইরূপ দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। সেই সময়ে বিদ্যাসাগর মহাশয় বর্দ্ধমানে ছিলেন। মাইকেল বর্দ্ধমানে গিয়া কাতর-কণ্ঠে সাহায্য প্রার্থনা করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহার কথায় কলিকাতা আসিয়া, নানা যোগাড় যন্ত্র করিয়া, মাইকেলকে “ব্যারিষ্টারি” কার্য্যে প্রবেশ করাইয়া দেন। মাইকেল বিদ্যাসাগর মহাশয়কে পিতার মত ভক্তি করিতেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ও তাঁহাকে পুত্রবৎ ভালবাসিতেন। বারিষ্টার হইলেও, পরিবার-পালনোপযোগী উপার্জ্জনে মাইকেল অক্ষম হইয়াছিলেন। স্বপ্রকাশিত পুস্তকের কতকটা আয় থাকিলেও, তিনি পানদোষে অমিতব্যয়ী হইয়া পড়িয়াছিলেন। সেই কারণে তাঁহাকে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট হইতে মধ্যে মধ্যে সাহায্য লইতে হইত। হস্তে এক কপর্দ্দকও ছিল না। মাইকেল বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট গিয়া উপস্থিত হইলেন। তিনি দেখিলেন, থাকে থাকে টাকা সাজান রহিয়াছে, দু দশটা থাক লইবার জন্য তিনি হস্ত প্রসারণ করিলেন। “নিস্‌নে নিস্‌নে,” করিতে করিতে, মুঠো ভরিয়া মাইকেল টাকা তুলিয়া লইলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহার এরূপ কার্য্যেও বিরক্ত হইতেন না।

 সহস্র সহস্র স্বভাবদোষ সত্ত্বেও মাইকেল বুদ্ধি-প্রতিভাবলে বিদ্যাসাগরের প্রীতিভাজন হইয়াছিলেন। মাইকেলের “প্রতিভা” জগতের পূজনীয়। সেই প্রতিভা প্রতিভার পূর্ণাকর বিদ্যাসাগরের যে প্রেমপ্রীতি আকর্ষণ করিবে, তাহার বিচিত্রতা কি? প্রতিভার পূজা প্রতিভার কাছেই হয়। প্রতিভার রাজ্যে প্রেমের প্রস্রবণ ছুটে। প্রতিভা মানুষের দোষ ঢাকিয়া দেয়। প্রতিভা মানুষকে