পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০৮
বিদ্যাসাগর।

বিদ্যার্জ্জনের সুলভ পথ পাইয়াছে। ইংরেজী শিক্ষা ভিন্ন উদরান্নের সংস্থান হওয়া আজ কাল দুষ্কর হইয়া পড়িয়াছে। বিদ্যাসাগর মহাশয় ইংরেজী বিদ্যাপ্রসারণের প্রশস্ততর পথ আবিষ্কার করিয়া যে এ যুগে যশস্বী হইবেন, তা আর বিচিত্র কি? তিনি যে আপন বিদ্যালয়ে ইংরেজ শিক্ষক বা অধ্যাপক নিযুক্ত না করিয়া এদেশীয় শিক্ষক বা অধ্যাপক নিযুক্ত করিতেন, তাহাতে তাঁহার স্বদেশিপোষকতা-প্রবৃত্তির পরিচয় পাই। এদেশী শিক্ষক লইয়া বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দিগ্বিজয়ী।

 পাশ্চাত্য বিদ্যার উৎকর্ষসাধন পক্ষে যে প্রণালী ও পদ্ধতির প্রয়োজন, বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাতে সিদ্ধহস্ত। পরাধীন অবস্থাতেও সংস্কৃত কলেজে তিনি তাহার চুড়ান্ত পরিচয় দিয়াছিলেন। স্বাধীন অবস্থায় নিজের বিদ্যালয়ে যে তিনি সে সম্বন্ধে অভাবনীয় কৃতিত্ব প্রদর্শন করিবেন, তাহা বলা বাহুল্যমাত্র। এখানে ত আর প্রভূদিগের রোষ কষায়িত কটাক্ষবিক্ষেপের বা শাসনসূচক তর্জ্জনী-তাড়নার বিড়ম্বনা ভোগ করিতে হয় নাই। সত্য সত্যই তাঁহার কৃতিত্বের যশ এখন বিশ্বব্যাপী। অধুনা এদেশীয় অনেক ব্যক্তি ইংরেজী বিদ্যা প্রচারার্থে সেই প্রণালী-পদ্ধতির পথানুসারী। যখন বিদ্যাসাগর যে কোন ইংরেজী বিদ্যাবিশারদ এদেশী লোক পাইতেন, তখনই তাঁহাকে নিজের বিদ্যালয়ে নিযুক্ত করিতেন। বালকদিগের প্রতি কটু ব্যবহার করিবার বা বেত্রাদি দণ্ড দিবার অধিকার কোন শিক্ষকেরই ছিল না। অথচ প্রায় কোন শিক্ষকেই ছাত্রদিগের দুরন্ত দুর্দ্দমনীয়তার জন্য অভিযোগ