পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেট্রপলিটন।
৪০৯

করিতে হইত না। যখন কোন ছাত্র দুর্দ্দান্ত হইয়া উঠিত, তখন তাহাকে বিদ্যালয় হইতে তাড়াইয়া দেওয়া হইত। এমন কি কখনও কখনও অবিনয়ের অপরাধে কোন কোন শ্রেণীর সমুদায় ছাত্র বিতাড়িত হইত। বিদ্যাসাগর মহাশয় ছাত্রদিগকে, শিক্ষকগণকে এবং ভৃত্য ও অন্যান্য কর্মচারিগণকে সততই সস্নেহ দৃষ্টিতে অবলোকন করিতেন। আমরা জানি, একবার স্কুলের ছাত্রগণ তাঁহার নিকট পৌষ-পার্ব্বণের ছুটি চাহে। বিদ্যাসাগর মহাশয় ছুটী মঞ্জুর করেন; পরস্তু ছাত্র বৃন্দকে সহাস্যে সস্নেহে বলেন,—“তোমাদের অনেকের ত বিদেশে বাড়ী; কলিকাতার বাসায় পিঠে পাইবে কোথায়?” বালকেরা বলিল,—“আপনার বাটীতে।” বিদ্যাসাগর মহাশয় হাসিয়া বলিলেন,—“ভাল, তাহাই হইবে।” তিনি বালকদিগের জন্য বাড়ীতে প্রচুর পিষ্টকের উদ্যোগ করিয়াছিলেন।

 স্বচক্ষে বিদ্যালয়-পরিদর্শন করা তাঁহার একটা স্বাভাবিক অভ্যাস ছিল। বিদ্যাসাগর মহাশয় কোন কার্য্যের ভার অপরের হস্তে দিয়া নিশ্চিন্ত থাকিতেন না। যাহা কিছু করিবার তিনি স্বয়ংই তাহা করিতেন। রুগ্নদেহেও পরনির্ভরতা তাঁহাকে আদৌ স্পর্শ করিতে পারে নাই। এইজন্য এক্ষণে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রকৃত শিষ্য দুষ্প্রাপ্য।

 যখন বিদ্যাসাগর মহাশয়, স্কুল-পরিদর্শনে আসিতেন, তখন তিনি কাহাকেও ‘পূর্বাহ্নে’ তাহা জানিতে দিতেন না। অধ্যাপক অধ্যাপনায় গাঢ় মনোনিবিষ্ট হইয়া আছেন, এমন সময় হয়ত তিনি ধীরে ধীরে আসিয়া, তাঁহাব পশ্চাদ্ভাগে দণ্ডায়মান থাকিতেন। কোন ক্রমে শিক্ষক বা অধ্যাপক, তাঁহাকে দেখিতে