পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ডিপজিটরীর স্বত্বত্যাগ।
৪৭৫

মহাশয় লিখিয়াছেন, “আপনি এক্ষণে ডিপজিটরীর কার্য্য রীতিমত চালাইয়া ইহার উপস্বত্ত্ব ভোগ করুন, পরে যেরূপ হয়, করা যাইবে।” রাজকৃষ্ণ বাবুর মুখে শুনিয়াছি, ইহার পর দুই এক জন লোক ৫।৬ হাজার টাকা দিয়া, ডিপজিটরীর স্বত্ত্ব ক্রয় করিতে চাহেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাহাতে সম্মত হন নাই। তিনি বলেন,—“যাহা এক জনকে একবার দিয়াছি, কোটি মুদ্রা পাইলেও তাহা ফিরাইয়া লইব না।”

 ১২৭৬ সালের ১০ই ফাল্গুন বা ১৮৭০ খৃষ্টাব্দের ২০শে ফেব্রুয়ারী রবিবার বেলা ৩টার সময় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পরম বন্ধু ডাক্তার দুর্গাচরণ বন্দোপাধ্যায় মানবলীলা সংবরণ করেন। যে অকৃত্রিম প্রিয় বন্ধুর নিকট বিদ্যাসাগর মহাশয় ইংরেজী বিদ্যা শিক্ষা লাভ করিয়াছিলেন; এবং যাহার অলৌকিক উদারতাগুণে এবং চিকিৎসা-সাহায্যে,বিদ্যাসাগর মহাশয় শত শত আর্ত্তপীড়িতের প্রাণ দান করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, সেই অভিন্ন-হৃদয় বন্ধুর বিয়োগে তিনি যে কিরূপ মর্মান্তিক তাপ পাইয়াছিলেন, তাহা বর্ণনাতীত। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কার্য্যে দুর্গাচরণ বাবু প্রাণ উৎসর্গ করিতেন। আবার দুর্গাচরণ বাবুর কার্য্যে বিদ্যাসাগর মহাশয়ও মনঃপ্রাণ ঢালিয়া দিতেন। ১৮৬৯ খৃষ্টাব্দে দুর্গাচরণ বাবুর জ্যেষ্ঠ পুত্র সুরেন্দ্রনাথ বিলাতে সিবিলিয়ান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন; কিন্তু তাঁহার বয়স লইয়া গোল হইয়াছিল। দুর্গাচরণ বাবু সে সংবাদ পাইয়া, এ দায়ে উদ্ধার পাইবার জন্য, আকুল প্রাণে বিদ্যাসাগরের শরণাপন্ন হন। বিদ্যাসাগর মহাশয়, পরম বন্ধু ৺দ্বারকানাথ মিত্রের সহিত নানা পরামর্শ করিয়া দুর্গাচরণ বাবুর দায় উদ্ধারার্থ বহুবিধ চেষ্টা করিয়াছিলেন। দ্বারকানাথ মিত্র ও বিদ্যাসাগর মহাশয় সুরেন্দ্র বাবুর