পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৭৮
বিদ্যাসাগর।

স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া বিগত মৈত্রীর পুনরুদ্ধার্থ অগ্রসর হইতেন না। মৈত্রী-উদ্ধারের এরূপ অনাকাঙ্ক্ষা, মানব-চরিত্রের মহত্ত্বপরিচায়ক নহে নিশ্চিতই; কিন্তু কৃতাত্ম-নির্ভর ও তেজস্বী পুরুষে প্রায়ই এরূপ দৃষ্টিগোচর হইয়া থাকে।

 ১২৭৭ সালে বা ১৮৭০ খৃষ্টাব্দে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অন্যতম সুহৃদ্ ও সহায় বর্দ্ধমানের মহারাজ মহাতাপচাঁদ বাহাদুরের মৃত্যু হয়।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়, ১৮৮০ সালে, ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক সভায় সহস্র টাকা দান করিয়াছিলেন। দীন-দরিদ্রে দান; যাচিত-অযাচিতে দান; সভা-সমিতিতে দান; আত্মপরে দান; বিদ্যাচর্চ্চায় দান; বিদ্যালয়-প্রতিষ্ঠায় দান;—দানময় জীবনের অবারিত দান। বিদ্যোৎসাহে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রচুর দানের কথা তুলিয়া, তাৎকালিক দক্ষিণ-পশ্চিম বিভাগের স্কুল ইন্‌স্পেক্টর মার্টিন সাহেব, বিস্ময়-বিমোহনে শত মুখে তাঁহাকে ধন্য ধন্য করিয়াছিলেন।

 ১২৭৭ সালের ২৭শে শ্রাবণ বা ১৮৭০ খৃষ্টাব্দের ১১ই আগষ্ট বৃহস্পতিবার পুত্র নারায়ণ বাবু বিধবা-বিবাহ করেন। পাত্রীর নাম শ্রীমতী ভবষুন্দরী। খানাকুল কৃষ্ণনগরবাসী ৺শম্ভুচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কন্যা। বয়স ত্রয়োদশ বৎসর।[১] নারায়ণ বাবু বিবাহ করিবার পূর্ব্বে পিতাকে এই ভাবে বলিয়াছিলেন,—“আমার এমন গুণ নাই, যে, আপনার মুখোজ্জ্বল করি; তবে আপনার জীবনের মহৎ ব্রত—বালবিধবা-বিবাহ-প্রচলন করিয়া,


  1. বিদ্যারত্ন মহাশয় বলেন,—ষোল বৎসর। ভ্রমনিবাস, ২৭ পৃষ্ঠা।