পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৫৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হিন্দু-উইল।
৫০৯

সাগর মহাশয় তাহাকে ছাড়াইয়া আনেন। সেক্রেটরী ডাইরেক্‌টরদের সহিত কোনরূপ পরামর্শ না করিয়া এই কেরাণীকে ছাড়াইয়া দেন। এ জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয়কে অত্যন্ত অপ্রস্তুত হইতে হইয়াছিল।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় যে সব কারণ ও যুক্তি দেখাইয়া ফণ্ডের সংস্রবত্যাগ করেন, তাহা মর্ম্মান্তিক কষ্টকর। এ সংস্রবত্যাগে তিনি যে কিরূপ মর্ম্মবেদনা পাইয়াছিলেন, তাহা তিনি অতি সরল ও করুণ ভাষায় ব্যক্ত করিয়াছিলেন। যে কয়েকটা কথা লিখিয়া, তিনি পত্রের শেষ করিয়াছেন, তা এইখানে উদ্ধৃত করিয়া দিলাম,—

 “এই ফণ্ডের সংস্থাপন ও উন্নতি সম্পাদন বিষয়ে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা,যত্ন ও পরিশ্রম করিয়াছি। উত্তর কালে আপনাদের ফলভোগের প্রত্যাশা,আছে; আমি সে প্রত্যাশা রাখি না। যে ব্যক্তি যে দেশে জন্মগ্রহণ করেন, সে দেশের হিতসাধনে সাধ্যানুসারে সচেষ্ট ও যত্নবান্ হওয়া, তাহার পরম ধর্ম্ম ও তাহার জীবনের সর্ব্বপ্রধান কর্ম্ম, কেবল এই বিবেচনায় আমি তাদৃশী চেষ্টা,যত্ন ও পরিশ্রম করিয়াছি, এতদ্ভিন্ন এ বিষয়ে আমার আর কিছুমাত্র স্বার্থসম্বন্ধ ছিল না। বলিলে আপনারা বিশ্বাস করিবেন কি না জানি না। কিন্তু না বলিয়াও ক্ষান্ত থাকিতে পারিতেছি না, এই ফণ্ডের উপর, আপনাদিগের সকলকার অপেক্ষা আমার অধিক মায়া। আমায়, সেই মায়া কাটাইয়া, ফণ্ডের সংস্রব ত্যাগ করিতে হইতেছে, সেই জন্য আমার অন্তঃকরণে কত কষ্ট হইতেছে, তাহা আমার অন্তরাত্মাই জানেন। যাঁহাদের হস্তে আপনারা কার্য্যভার অর্পণ করিয়াছেন, তাঁহারা সরল পথে চলেন না। এমন স্থলে, এ বিষয়ে