পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
বিদ্যাসাগর।

Report of the India Education Commission, P. 257.

 উহার তো ইহাই ভাবার্থ,—অনেক ভদ্রবংশজাত এবং বুদ্ধিমান হিন্দুসস্তান প্রস্কাশ্যভাবে স্বধর্ম্মে আস্থাশূন্য হইয়াছিলেন।অতঃপর পাঠকের বোধ হয়,আর কোনও সন্দেহ রহিল না।

 তাৎকালিক অনেক ইংরেজি-শিক্ষিত হিন্দুসন্তান ইংরেজের গুণানুকরণে অক্ষম হইয়া দোষাবলীর সম্পূর্ণ অনুকরণ করিয়া বসিয়াছিলেন। ইংরেজ রাজা; ইংরেজ জগতে প্রভূত শক্তিশালী, ইংরেজ সমুন্নত সভ্যজাতি বলিয়া সমগ্র পৃথিবীতে পরিগণিত। সত্য ইংরেজ যাহা যাহা করিয়া থাকেন,তদানীন্তন ইংরেজি-শিক্ষিত অনেক কৃতী ব্যক্তি তাহা সভ্যতানুমোদিত বলিয়া মনে করিয়াছিলেন।

 প্রকৃত গুণের অনুকরণ বড় সোজা কথা নহে। গুণানুকরণ তাঁহাদের সাধ্যাতীত হইয়াছিল। যাহা সহজসাধ্য এবং অকষ্টকল্প, তাহাই তাঁহাদের অনুকরণীয় হইল। ইংরেজ গরু খান, ইংরেজ মদ খান, ইংরেজ ক কোটপেণ্টুলেন পরেন, ইংরেজ ঘাড়ের চুল ছাঁটিয়া মস্তকের সন্মুখ ভাগে লম্বা লম্বা চুল বাখেন। এই সব অনায়াসসাধ্য কার্য্যগুলিকে সভ্যতার অঙ্গ ভাবিয়া অনেক ইংরেজিশিক্ষিত হিন্দুসন্তান তদনুকরণে পূর্ণমাত্রায় প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। এমন কি তখন হিন্দু কলেজের অনেক ছাত্র, কলেজের সম্মুখে, গোলদীঘির অনাবৃত প্রাঙ্গণে বসিয়া সুরাপান করিতে কুণ্ঠিত হইতেন না। অনেকে গোমাংস ভক্ষণ করিয়া ভূক্তবিশেষ অস্থিমাংস প্রতিবেশী গৃহস্থের বাড়ীতে নিক্ষেপ করিয়া পরম আনন্দ অনুভব করিতেন। তাঁহারা ভাবিতেন, এরূপ না করিলে, ইহাদের বর্ব্বরতার কলঙ্ক অপনীত হইবে না।

 ইংরেজি শিক্ষার এতাদৃশ বিষময় ফল-সন্দর্শনে সমগ্র হিন্দু-সমাজ