পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একগুঁয়েমি।
৬৫

 এই সময় বালক ঈশ্বরচন্দ্রের “একগুঁয়েমী ফুটিতে আরম্ভ হয়। এই “এক গুঁয়েমীর” দরুণ পিতা অনেক সময় উত্যক্ত হইতেন। পিতা বলিতেন,—“ফরসা কাপড় পরিয়া স্কুলে যাও।* ঈশ্বরচন্দ্র বলিতেন,—“ময়লা কাপড় পরিয়া যাইব।” যে দিন ঈশ্বরচন্দ্র স্নান করিব না মনে করিতেন, সে দিন তাঁহাকে স্নান করান বড়ই দুষ্কর হইত। পিতা তাঁহাকে ধরিয়া লইয়া গিয়া গঙ্গার ঘাটে বলপুর্ব্বক স্নান করাইয়া দিতেন। অন্য কোন গুরু জন কোন কাজ করিতে বলিলে, ঈশ্বরচন্দ্র যদি মনে করিতেন করিব না, তাহা হইলে কেহই তহিকে তাহা করাইতে পারিতেন না। গুণের মধ্যে এই ছিল, ঈশ্বরচন্দ্র কাহারও কথায় কোন উত্তর না দিয়া কেবল ঘাড় বাঁকাইয়া দাড়াইয়া থাকিতেন। এই জন্য পিতা ঠাকুরদাস তাঁহাকে অনেক সময় “ঘাড়কেঁদো” বলিয়া ডাকিতেন। বালক ঈশ্বরচন্দ্রের “একগুঁয়েমীর” কথায় বালক জনসনের “একগুঁয়েমীর” কথা মনে পড়িয়া যায়। বাল্য কালে এক জন ভৃত্য জনসনকে প্রত্যহ স্কুল হইতে লইয় আসিত। এক দিন ভূত্যের যাইতে বিলম্ব হওয়ায় বালক জনসন আপনি স্কুল হইতে বাহির হন এবং পথে চলিয়া যান। স্কুলের কর্ত্রী জানিতে পারিয়া ভাবিলেন, বালক হয় পথ ভুলিয়া অন্যত্র গিয়া পড়িবে, না হয় অন্য কোনরূপ বিপদগ্রস্ত হইবে। এই ভাবিয়া তিনি জনসনের অনুবর্ত্তিনী হন। বালক জনসন দেখিলেন কর্ত্রী তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ অসিতেছেন। তাঁহার শক্তি সম্বন্ধে কর্ত্রী সন্দিহীন হইয়াছেন ভাবিয়া, বালক জনসন অভিমানে অভিভূত হইলেন এবং অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হইয়া উঠলেন, এমন কি তখনই ফিরিয়া গিয়া কর্ত্রীকে যথাসাধ্য প্রহার করিলেন। জনসনের জীবনীলেখক