পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি
৯৭

পুস্তক রচনা করিয়া মুদ্রিত ও প্রকাশিত করিলেন। ইহার মধ্যে সন্ধি, শব্দ, ধাতু, কৃদন্ত, কারক, সমাস, তদ্ধিত আছে। সংস্কৃত-ভাষায় অধিকাংশ পুস্তক দেবনাগর অক্ষরে লিখিত থাকে; একারণ, উপক্রমণিকার শেষভাগে দেবনাগর অক্ষরের বর্ণপরিচয়ও মুদ্রিত হইয়াছে। উপক্রমণিকা শেষ করিয়া সাহিত্য বুঝিতে পারিবে না, এই জন্য শেষে সরল-ভাষায় সংস্কৃত গদ্য-রচনাও সন্নিবেশিত হইয়াছে। বিদ্যার্থী বালকগণ ছয় মাসের মধ্যে উপক্রমণিকা পাঠ করিয়া, সংস্কৃত-ভাষা শিখিতে সক্ষম হয় দেখিয়া, সর্ব্বসাধারণ লোকে অগ্রজের এই লোকাতীত ক্ষমতায় আশ্চর্য্য়ান্বিত হইয়াছিলেন।

 উপক্রমণিকা অধ্যয়ন করিয়াই রঘুবংশ প্রভৃতি অধ্যয়ন করা শিশুগণের পক্ষে দুরূহ বিবেচনা করিয়া, পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থ হইতে কতিপয় সরল গল্প উদ্ধৃত করিয়া, সন ১২৫৮ সালের ১লা অগ্রহায়ণ, সংস্কৃত ঋজুপাঠ নামক পুস্তক মুদ্রিত ও প্রচারিত করেন। সন ১২৫৮ সালের ২২শে ফাল্গুন রামায়ণের কতিপয় শ্লোক উদ্ধৃত করিয়া, ২য় ভাগ ঋজুপাঠ মুদ্রিত করেন। তৎপরে হিতোপদেশের সরল গদ্য ও পদ্য এবং মহাভারত, বিষ্ণুপুরাণ, ঋতুসংহার, বেণীসংহার ও ভট্টিকাব্য এই সকল গ্রন্থের কিয়দংশ উদ্ধৃত করিয়া, তৃতীয় ভাগ ঋজুপাঠ মুদ্রিত ও প্রকাশিত করেন। বালকেরা এক বৎসরের মধ্যে ঋজুপাঠ প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগ অধ্যয়ন করিয়া, অনায়াসে সাহিত্য-শাস্ত্র অধ্যয়ন করিবার অধিকার পাইয়া থাকে এবং সংস্কৃত রচনা করিবারও যে সামান্যরূপ ক্ষমতালাভ করিয়া থাকে, তাহা বিলক্ষণরূপে প্রকাশ পাইয়াছে। ব্যাকরণের উপক্রমণিকা প্রচার না হইলে, বিষয়ী লোক প্রভৃতি কখনই সংস্কৃত অধ্যয়নে প্রবৃত্ত হইতে সক্ষম হইতেন না। ফলতঃ বিদ্যাসাগর মহাশয়ই সংস্কৃত-ভাষা শিখিবার সহজপথপ্রদর্শক।

 কলিকাতায়, গ্রীষ্মের অত্যন্ত প্রাদুর্ভাব, ঐ সময় কলিকাতায় থাকিরা পাঠ করা একান্ত কষ্টকর; একারণ, ঐ সময়ে অবকাশের আবশ্যক বিবেচনা করিয়া বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ দুই মাস অবকাশের জন্য শিক্ষাসমাজে আবেদন করিয়া কৃত-