পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৬
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

এরূপ কথা শুনিয়া, অগ্রজ মহাশয়, অপরিসীম হর্ষ প্রাপ্ত হন এবং গ্রামের প্রধান প্রধান লোকদিগকে আনাইয়া বলেন যে, “তোমরা সকলে ঐক্য হইয়া, গ্রামের কোন্ কোন্ ব্যক্তির অত্যন্ত অন্নকষ্ট ও কোন্ কোন্ ব্যক্তি নিরাশ্রয়, তাহাদের নাম লিখিয়া দাও, আমি মাসে মাসে উহাদের কিছু কিছু সাহায্য করিব।” গ্রামস্থ ভদ্রলোকেরা যে ফর্দ্দ করিয়া দিলেন, সেই ফর্দ্দ অগ্রজ মহাশয় স্বহস্তে লিখিয়া আমার নিকট প্রদান করিয়া বলিলেন, “তুমি পূর্ব্বাবধি যেরূপ নিরুপায় আত্মীয়াদিগকে ও বিধবাবিবাহসম্পৰ্কীয় নিরুপায় ব্যক্তিদিগকে ফর্দ্দানুসারে টাকা বিতরণ করিয়া আসিতেছ, সেইরূপ এই ফর্দ্দানুসারে গ্রামস্থ নিরুপায় ব্যক্তিদিগকে মাসে মাসে টাকা দিবে এবং সময়ে সময়ে গ্রামস্থ ব্যক্তিদিগের অবস্থার বিষয় বিশেষরূপে আমায় লিখিবে।” দূরস্থ স্বসম্পৰ্কীয় বা বিধবাবিবাহকারী লোকদিগের বাটীতে লোক পাঠাইয়া, মাসিক টাকা প্রদান করা হইত। ঐ লোকের রীতিমত বেতন তাহাদিগকে দিতে হয় নাই; এরূপ দান সহজ নহে।

 ৭৪ সালের শ্রাবণ মাসে নদীয়া জেলার অন্তঃপাতী আইসমালী গ্রামে গোপালচন্দ্র সমাজপতির সহিত বিদ্যাসাগরের জ্যেষ্ঠা কন্যা হেমলতাদেবীর বিবাহ হয়। বর অতি সৎপাত্র; অগ্রজ মহাশয় ইঁহাকে অত্যন্ত ভাল বাসিতেন।

 এই সময় মধ্যম সহোদর দীনবন্ধু ন্যায়রত্ন মহাশয়ের সহিত জ্যেষ্ঠাগ্রজ মহাশয়ের সংস্কৃত-প্রেস ও উহার ডিপজিটারী লইয়া বিবাদ হয়। কিন্তু মধ্যমাগ্রজ মহাশয়কে ক্ষান্ত করিয়া দেওয়ায়, তিনি সংস্কৃত-প্রেসের ও উহার ডিপজিটারীর দাবী পরিত্যাগ করিলেন।

 সন ১২৭৫ সালের অগ্রহায়ণ মাসে গবর্ণমেণ্টের আদেশে বাবু রমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, ইনকম্ ট্যাক্স ধার্য্যের জন্য জাহানাবাদ মহকুমায় উপস্থিত হন। যে সকল সামান্য ব্যবসায়ীর আইনানুসারে ট্যাক্স ধার্য্য হইতে পারে না, তাহাদের প্রতি অন্যায়পূর্বক দুই নামে একত্র এক বিলে ট্যাক্স ধার্য্য করিতেছিলেন। কেহ কেহ এই গৰ্হিত আইনবিরুদ্ধ কার্যো সন্মত না হইলে, ভয় প্রদর্শন দ্বারা