পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আরসুলা ও ইন্দুর ভিন্ন অপর কেহ সেখানে বাস করিত না। চাহিয়া দেখিলাম একটা জানালার সম্মুখে একখানা জরাজীর্ণ চটের পর্দা ঝুলিতেছে। তাহারই আড়ালে দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া জানলার ফাঁক দিয়া পুলিস প্রহরীদিগের গতিবিধি লক্ষ্য করিতে লাগিলাম। সে রাতটুকু যেন আর কাটে না!

 ‘ক্রমে কাক ডাকিল; কোকিলও এক আধটা বোধ হয় ডাকিয়াছিল। পূর্বদিক একটু পরিষ্কার হইলে দেখিলাম বাগান লাল পাগড়ীতে ভরিয়া গিয়াছে। কতকগুলো গোরা সার্জেণ্ট হাতে প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড চাবুক লইয়া ঘুরিতেছে। পাড়ার যে কয়জন কোচম্যান জাতীয় জীবকে খানাতল্লাসীর সাক্ষী হইবার জন্য পুলিসের কর্তার সঙ্গে করিয়া আনিয়াছিলেন তাহারা ‘হুজুর হুজুর’ করিয়া ছুটিতেছে। পুকুর ঘাটের একটা বড় আমগাছের তলায় আমাদের হাত বাঁধা ছেলেগুলা জোড়া জোড়া বসিয়া আছে; আর উল্লাসকর তাহাদের মধ্যে বসিয়া ইন্সপেক্টর সাহেবের ওজন তিন মণ কি সাড়ে তিন মণ এই সম্বন্ধে গবেষণাপূর্ণ বিচার আরম্ভ করিয়া দিয়াছে।

 ‘ক্রমে ছয়টা বাজিল, সাতটা বাজিল; আমি তখনও পর্দানসিন বিবিটির মত পর্দার আড়ালে। ভাবিলাম এ যাত্রা বুঝি কর্তারা আমাকে ভুলিয়া যায়। কিন্তু সে বৃথা আশা বড় অধিকক্ষণ পোষণ করিতে হইল না। আমাদের অতিকায় ইন্সপেক্টর সাহেব জুতার শব্দে পাশের ঘর কাঁপাইতে কাঁপাইতে আসিয়া আমার ঘরের দরজা খুলিয়া ফেলিলেন। পাছে

৬৬