পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२Jानि నీ ঈশ্বর কাহাকে বল ? যিনি সৃষ্টিকৰ্ত্তা এবং পাপপুণ্যের ফলবিধাতা। যিনি সৃষ্টিকৰ্ত্তা, তিনি মুক্ত না বদ্ধ ? যদি মুক্ত হয়েন, তবে তঁাহার সৃজনের প্রবৃত্তি হইবে কেন ? আর যিনি মুক্ত নহেন-বদ্ধ, তঁাহার পক্ষে অনন্ত জ্ঞান ও শক্তি সম্ভবে না। অতএব একজন সৃষ্টিকৰ্ত্তা আছেন, ইহা অসম্ভব । মুক্তবদ্ধয়োরন্যািতরাভাবান্ন তৎসিদ্ধিঃ ( ১, ১৩ ) ; উভয়থাপ্যসৎকরত্নম ( ১, ৯৪ ) । সৃষ্টিকর্তৃত্ব সম্বন্ধে এই ! পাপপুণ্যের দণ্ডবিধাতৃত্ব সম্বন্ধে মীমাংসা করেন যে, যদি ঈশ্বর কৰ্ম্মফলের বিধাতা হয়েন, তবে তিনি অবশ্য কৰ্ম্মানুযায়ী ফল নিম্পত্তি করিবেন, পুণ্যের শুভ ফল, পাপের অশুভ ফল অবশ্য প্রদান করিবেন | সদি। তিনি তাহা না করেন, স্বেচ্ছামত ফলনিষ্পত্তি করেন. তবে কি প্রকারে ফলবিধান করিতে পারেন ? যদি সুবিচার করিয়া ফল বিধান না করেন, তবে আত্মোপকারের জন্য করাই সম্ভব । তাহা হইলে তিনি সামান্য লৌকিক রাজার ন্যায় আত্মোপকারী, এবং সুখ দুঃখেৰ অধীন। श१ि उाछ। मा তইয়া কৰ্ম্মানুযায়ীই ফলনি, পত্তি করেন, তবে কেন কৰ্ম্মপে ই ফলবিধাতা বল না ? ফলনিস্পত্তির জন্য অবাব কৰ্ম্মের উপর ঈশ্বরানুমানের প্রয়োজনা কি ? অতএব সাংখ্যকার দ্বিতীয় শ্রেণীর ঘোরতর নাপ্তিক । অথচ তিনি বেদ মানেন । ঈশ্বর না মানিয়া ও কেন বেদ মানেন, তাহা আমরা পরপরিচ্ছেদে দেখাইব । সাংখ্যের এই নিরীশ্বরতা বৌদ্ধধৰ্ম্মের পূর্বসূচনা বলিয়া বোধ হয় । ঈশ্বরতন্তু সম্বন্ধে সাংখ্যদর্শনের একটি কথা বাকি রহিল। পূর্বেই বলিয়াছি, অনেকে বলেন, কাপিল দর্শন নিরীশ্বর মতে । এ কথা বলিদার কিছু একটু কারণ অাছে। তৃ, অ, ৫৭ সূত্রে সূত্ৰকার বলেন, “ঈদৃশ্যেশ্বর সিদ্ধি: সিদ্ধা ।” সে কি প্রকার ঈশ্বর ? “স হি সৰ্ব্ববিৎ সৰ্ব্বকৰ্ত্তা." J, ৫ ১৮ ; তবে সাংখ্য নিরীশ্বর হইল কই ? বাস্তবিক এ কথা ঈশ্বর সম্বন্ধে উক্ত হয় নাই। সাংখ্যকর বলেন, জ্ঞানেই মুক্তি, আর কিছুতেই মুক্তি নাই । পুণে), অথবা সত্ত্ববিশাল উৰ্দ্ধলোকেও মুক্তি নাই ; কেন না, তথা হইতে পুনর্জন্ম আছৈ, এবং জরােমরণাদি দুঃখ আছে । শেষ এমনও বলেন যে, জগৎকারণে লয়প্রাপ্ত হইলেও মুক্তি নাই ; কেন না, তাহা গাইতে জলমগ্নের পুনরুত্থানের ন্যায় পুনরুত্থান আছে ( ২, ৫৪ ) । সেই লয়প্রাপ্ত আত্মা সম্বন্ধে তিনি বলিয়াছেন যে, তিনি “সর্ববিৎ এবং সৰ্ব্বকৰ্ত্তী৷ ” ইহাকে যদি ঈশ্বর বলিতে চাও, তবে ঈদৃশ্যেশ্বর সিদ্ধ। কিন্তু ইনি জগৎস্রষ্টা বা বিধাতা নহেন । “সৰ্ব্বকৰ্ত্তা” অর্থে সৰ্ব্বশক্তিমান, সৰ্ব্বসৃষ্টিকারক নহে।