পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিবিধ সমালোচন।
৩১

 পরে সীতার পূর্ব্বকালের প্রিয়সখী, বনদেবতা বাসন্তী, সীতার পুত্ত্রীকৃত করিশাবকের সহায়ান্বেষণ করিতে২ সেইখানে উপস্থিত হইলেন। রামের সঙ্গে তাঁহার সাক্ষাৎ হওয়ায়, রাম করিশিশুর রক্ষার্থ গেলেন। সেই হস্তিশিশু স্বয়ং শত্রুজয় করিয়া করিণীর সহিত ক্রীড়া করিতে লাগিল। তদ্বর্ণনা অস্তি মধুর।

যেনোদ্গচ্ছদ্বিসকিশসয়স্নিগ্ধ দন্তাঙ্কুরেণ
ব্যারূষ্টস্তে সুতনু লবলীপল্লবঃ কর্ণপূবাৎ।
সোয়ং পুত্ত্রস্তব মদমুচাং বারণানাং বিজেতা
যং কল্যাণং বয়সি তরুণে ভাজনং তস্য জাতঃ।
সখি বাসন্তি পশ্য পশ্য কান্তানুবৃত্তিচাতুর্য্য মপি শিক্ষিতং বৎসেন।
লীলোৎখাতমৃণালকাণ্ডকবলচ্ছেদেষু সম্পাদিতাঃ
পুষ্পেৎ পুষ্করবাসিতস্য পয়সো গণ্ডূসসংক্রান্তঃ।


    বলিতেছেন বলিয়া আমি স্পর্শ করিব।” ইহাতে এই বুঝিতে হইতেচে যে পাণিস্পর্শ সফল হইবে কি না, এই সন্দেহেই সীতা বলিলেন, “যা হউক। তা হউক!” কিন্তু আমাদিগের ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে বোধ হয় যে সে সন্দেহে সীতা বলেন নাই যে, “যা হবার হউক!” সীতা ভাবিয়াছিলেন, “রামকে স্পর্শ করিবার আমার কি অধিকার? রাম আমাকে ত্যাগ করিয়াছেন, তিনি আমাকে বিনাপরাধে বিসর্জ্জন করিয়াছেন—বিসর্জ্জন করিবার সময়ে এক বার আমাকে ডাকিয়াও বলেন নাই যে আমি তোমাকে ত্যাগ করিলাম—আজি বার বৎসর আমাকে ত্যাগ করিয়া সম্বন্ধ রহিত করিয়াছেন, আজি আবার তাঁহার প্রিয়পত্নীর মত তাঁহার গাত্রস্পর্শ করিব কোন্ সাহসে? কিন্তু তিনি ত মৃতপ্রায়! যা হউক তা হউক, আমি তাঁহাকে স্পর্শ করিব।” তাই ভাবিয়াই সীতাস্পর্শে রাম চেতনা প্রাপ্ত হইলে, সীতা বলিলেন “ভঅবদি তমসে! অৌসরহ্ম জইদাবং মং পেক্‌খিস্মদি তদো অণব্তণুণ্ণাদসণ্ণিধাণেণ অহিঅদরং মম মহারাঅো কুবিস্মদি।” তবু “মম মহারাঅো!”