পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপহলুদ २७6 -७ ! ई-म-ह-टैिंक । —আমাকে বল্লেই হোত আমি গুছিয়ে দিতাম ! চকত্তি-বুড়ে আর কিছু না বলে চুপ করে গেল। বেলা নটার মধ্যে আমি ডাল-ভাত আর ঝিঙেভাজ রান্ন করলাম । খেয়ে-দেয়ে পোটলা বেঁধে সে রওনা হোল কলকাতায় । যাবার সময় বার বার বলে গেল—নিজের ঘরের লোকের মত থেকে ঠাকুর। পেয়ারা আছে, আমকঁঠাল আছে, উৎকৃষ্ট পেপে আছে, তরিতরকারি পোতে, আমার খাস-জমি পড়ে আছে তিন বিঘে । ভদ্রাসন হোল দেড় বিঘের ওপর। লোক-অভাবে জঙ্গল হয়ে পড়ে আছে । খাটে, তরকারি উৎপন্ন করে, থাও, বেচো—তোমার নিজের বাড়ি ভাববে। দেখাশুনো করে, থাকে । ভাবনা নেই । আর একটা কথা— —কি ? চক্কত্তি-বুড়ে অকারণে সুর খাটো করে বল্লে—কত লোকে ভাঙচি দেবে। কারো কথা শুমো না যেন । বাড়ি দেখাশুনো যেমন করবে, নিজের মতো থাকবে, কোনো কথায় কান দেবে না, গাছের ফল-ফুলুরি তুমিই খাবে। দুটাে ঘর খোলা রইলো তোমার জন্তে । বুড়ে চলে গেল । আমাকে যেন আকাশে তুলে দিয়ে গেল।’ আরে, এত বড় বাড়ির বড় বড় দুখানা ঘর আমার ব্যবহারের জন্য রয়েচে—তাছাড়া বারান্দ, রান্নাঘর, রোয়াক তো আছেই! বাড়িতে পাতকুয়ে, জলের কষ্ট নেই। শুকনো কাঠ যথেষ্ট, কাঠের কষ্ট নেই। দশটা টাকা আগাম দিয়ে গিয়েচে বুড়ে, প্রায় আধ-মণটাক সরু আতপ চালও আছে। গাছ-ভরা আম-কঁঠাল । এ যেন ভগবানের দান আকাশ থেকে পড়ল হঠাৎ ! বিকেলের দিকে তেল-মুন কিনবে বলে মুদির দোকান খুঁজতে বেরুলাম । বাপ রে, কি বন-জঙ্গল গাখানার ভেতরে! আর এদের যেখানে বাড়ি তার ত্রিসীমানায় কি কোনো লোকালয় নেই ? জঙ্গল ভেঙে মুড়িপথ ধরে আধ মাইল যাবার পর একজন লোকের সঙ্গে দেখা হোল । সেও তেল কিনতে যাচ্চে, হাতে তেলের ভঁাড় । আমায় দেখে বল্লে—বাড়ি কোথায় ? —এখানে আছি নিবারণ চক্কত্তির বাড়ি । -@. —নিবারণ চক্কত্তির ? কেন ? —দেখাশুনো করি । কাল এসেচি । —ও বাড়িতে থাকতে পারবে না । —কেন ? —এই বলে দিলাম। দেখে নিও। কত লোক ও বাড়িতে এল গেল । ওরা নিজেরাই থাকতে পারে না, তা অন্ত লোক ! ও-বাড়ির ছেলে-বেয়ের কস্মিনকালে ও-বাড়িতে আসে না— —কেন ? —তা কি জানি ও বড় ভয়ানক বাড়ি। তুমি বিদেশী লোক। খুব সাবধান । আর কিছু না বলে লোকটা চলে গেল। আমি দোকান খুজে জিনিস কিনে বাড়ি ফিরলাম। তখন বিকেল গড়িয়ে গিয়ে সন্ধ্যা নামচে। দূর থেকে জঙ্গলের মধ্যেকার পুরোনো উচু দোতলা বাড়িখানা দেখে আমার বুকের ভেতরটা ছাৎ করে উঠলো। সত্যি, বাড়িখানার চেহারা কি রকম যেন ও যেন একটা জীবন্ত জীব, আমার মতো ক্ষুদ্র লোককে যেন গিলে ফেলবার জন্ত হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসচে। অমনতর ওর চেহারা কেন ? কিছু না। লোকটা আমার মন খারাপ করার জন্ত দায়ী। আমি যখন তেল স্থা নিতে