পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত 3Ꮬ☾ অনঙ্গ-বেী রাগের সুরে বললে—হাসি কিসের ? ছোট-বেী মুখ চুন করে বললে—এমনি। —ও পুটুলি কিসের ? —ওতে চাল । তোমার জন্তি এনিচি । —বীটা মারি তোর চালের মাথায়। নিয়ে যা এখান থেকে। আমি কি করব তোর চাল ? —রাগ কোর না বামুন-দিদি, পায়ে পডি। তুমি রাগ কল্পি আমি কনে যাব ? এবার ছোট-বেীরের চোখ দুটো যেন জলে ভরে এল। সত্যিকার চোখের জল । অনঙ্গ-বৌয়ের মনটা নরম হোল। থানিকটা স্নেহের মুরে বললে—বদমাইশ কোথাকার । ধাডি মেয়ে, তোমার কণগুজ্ঞান নেই, কি কাজ করতে কি কাজ করে বসে তোমার জ্ঞান হয় না ? আজি বাদে কাল কোথায় গিয়ে জবাবদিহি করতে হবে সে খেয়াল হয় না তোমার ? সতের বাট মারি তোমার মাথায় তবে যদি এ রাগ যায়। অজ্ঞান পাপীকে ভগবানও বোধ হয় এমনি সস্নেহ অকুযোগের মুরে তিরস্কার করেন। ছোট-বোঁ মুখ চুন করে মাটির দিকে চেয়ে বসে রইল। —এরই মধ্যে একদিন মতি মুচিনী অতি অসহায় অবস্থার এসে পৌছলে ওদের গায়ে। সকালে হাবু এসে বললে—মতি-দিদিকে দেখে এলাম মা, কপালীদের বাড়ী বসে আছে। ওর চেহারা বড় খারাপ হয়েছে। অনঙ্গ-বে বললে—কি রকম দেখে এলি ? --রোগা মত । —জর হয়েছে ? —তা কি জানি ! দেখে আসবো ? হাৰু আবার গেল, কিন্তু মতিকে সেখানে না দেখে ফিরে চলে এল। আর দুদিন ওর কথা কারো মনে নেই, একদিন সকালে মতি হাবুদের বাড়ীর সামনে একটা আমগাছের তলায় এসে শুয়ে পড়লো। ওর হাত-পা ফুলেছে, মুখ ফুলেছে, হাতে একটা মাটির ভাড়! সারা দুপুর সেখানে শুয়ে জরে ভূগেছে, কেউ দেখে নি, বিকেলের দিকে গঙ্গাচরণ বাড়ী ফিরবার পথে ওকে দোপ কাছে গিয়ে বললে, কে ? ওকে চিনবার উপায় ছিল না। মতি অতি কষ্টে গেড়িয়ে গেড়িয়ে বললে—আমি দাদাঠাকুর— —কে, মতি এখানে কেন ? কি হয়েছে তোর ? —বডড জর দাদাঠাকুর, তিন দিন খাই নি, দুটো ভাত খাবো । —তা হয়েচে ভালো। তুই উঠে আয় দিকি, পারবি ? উঠবার সামর্থ্য মভির নেই। গঙ্গাচরণ ওকে ছোবে না। সুতরাং মতি সেখানেই শুয়ে রইল। অনঙ্গবোঁ শুনতে পেয়ে বাস্ত হয়ে উঠলো কিন্তু সেও অত্যন্ত দুৰ্ব্বল। উঠে মতির