পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জন্ম ও মৃত্যু 9岱 —আচ্ছা কুমী, এতটা না বকে সামান্ত দু' কথায় শাদ উত্তর একটা দে না কেন ? বকুনিতে আমি কি তোর সঙ্গে পারব ? —ন, তা তুমি পারবে কেন ? বকতে তুমি একটুও জানো না। হ্যা, হই। —মন থেকে বলচিস ? —আমার ডাক ছেড়ে কাদতে ইচ্ছে করচে হীরুদ, এতটা বদলে গিয়েচ তুমি ? যাও —আমি তোমার কোনো কথার আর উত্তর দেবো না তুমি না নিজের বুদ্ধির বড় অহঙ্কার করতে ? –কুমী, রাগ করি নে। অনেক কাজের মধ্যে থেকে আমার স্বল্প-বুদ্ধিটা নষ্ট হয়ে গিয়েচে । যাক, বাঁচলুম কুমী ! —পায়েসটা খাও তোমার পায়ে পড়ি। আর বকুনিটা কিছুক্ষণের জন্তে ক্ষান্ত রাখো । কিছু তোমার পেটে গেল না এই অনাছিষ্ট বকুনির জন্তে । কুমী পরদিন এসে বিছানা-বাক্স গুছিয়ে দিলে। ঘাট পৰ্য্যন্ত এসে ওদের নৌকোতে, উঠিয়ে দিলে। নৌকো ছেড়ে যখন অনেকটা গিয়েছে তখনও কুমী ডাঙায় দাড়িয়ে আছে। দু'পাড়ের নদীচর নির্জন । দুপুরের রৌদ্র আজ বড় প্রখর, আকাশ অদ্ভূত ধরনের নীল, মেঘলেশহীন। বঙ্গার জলে পাড়ের ছোট কালকামুন্দি গাছের বন পৰ্যন্ত ডুবে গিয়েছে। কচুরিপানার বেগুনী ফুল চড়ার ধারে আটকে আছে। সেই সব বন-জঙ্গলময় ডাঙ্গার পাশ দিয়ে চলেছে ওদের নৌকো। ঝোপের তলার-ছায়ায় ডাহুক চরছে। বন্যার জলে নিমগ্ন আখের ক্ষেতের আখগাছগুলো স্রোতের বেগে থরথর করে কঁপিছে । ছইয়ের মধ্যে পিসিমা ঘুমিয়ে পডেচেন। নিস্তব্ধ ভাদ্র অপরাতু। নৌকোয় তক্তার ওপর বসে বসে হীরু কত কি ভ ছিল। এ গ্রামে যদি সে থাকতে পারত ! মধু ডাক্তারের মতে হাটতলায় ওষুধের ডিসপেনসারি খুলে ? ডাক্তারীটা যদি শিখতে সে! পুজোর বাজারটা ফিরবার সময় করতে হবে কলকাতা থেকে. অন্ততঃ দেড়-শো টাকার বাজার। আসবার সময় খুব উৎসাহ করে সুরমার কাছ থেকে ফর্দ করে নিয়ে এসেছে... একটা মানুষের মধ্যে মানুষ থাকে অনেকগুলো! জামালপুরের হীরু অন্তলোক, এ হীরু আলাদা। এ বসে বসে ভাবছে, কুমীদের রান্নাঘরে অরন্ধনের নেমস্তন্ন খেতে বসেছিল, সেই ছবিটা। অনবরত ওই একটা ছবিই । কুমী বলছে—আমার কথা মনে পড়তে হীরুদা ?... কুমী এখনও কি ঠিক তেমনি হাত-পা নেড়ে কথা বলে “ঠিক সেই ছেলেবেলাকার মতো! .. আচ্ছা, আর কারে সঙ্গে কথা বলে আমন আনন্ম হয় না কেন ? সুরমার সঙ্গেও তো . cब्रांछ कङ कथां श्ब्र“कद्दे“ রেলের বাশির আওয়ালে হীর চমক ভাঙলো। ওই স্টেশনের ঘাট দেখা দিয়েছে। সিগাল নামানে, বোধ হয় ডাউনট্রেণটা আসবার দেরি নেই.