পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৪৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনে-পাহাড়ে 8२१ —ভারি চমৎকার গন্ধ বটে। কিসের ? --८कांहनां वजांनी दमकूरजङ्ग আমি একটা ভয়ানক ভূল অনেকক্ষণ থেকে করছিলাম। বামিয়াবুরু এবং নিকটবর্তী অরণ্যে একপ্রকার গাছকে আমি বারবার কনকচাঁপার গাছ বলে আসচি এবং এই দুই বনবিভাগের উচ্চ কৰ্ম্মচারীর সঙ্গে তর্ক করেছি নিজের মতকে প্রতিষ্ঠিত করবার চেষ্টায়—কারণ, ওঁরা বলচেন, চাপাগাছ নয়। ও হোল ভেড লেণ্ডিয়া—আর চম্পক হোল মাইকেলিয়া চম্পক ; তার পাত হবে কালে কালো লম্বা লম্ব । আমি বলে আসচি, না তা নয়। স্বর্ণটাপার পাতা অমন হবে না। এই যাকে বলচেন ভেড লেণ্ডিয়া এই হোল স্বর্ণচাপ । ওরা আমার জেদ দেখে বলেছিলেন—ত হতে পারে হয়তো । কিন্তু ও গাছক্সে,আমরা আগাছা স্বরূপ বিবেচনা করি। এ ভুল আমার কি ভাবে ভুেঞ্জেছিল, সে পরে বলচি—এখন আমার হঠাৎ মনে হোল বানব সেই স্বর্ণপার রূপদ্ধ ন'তো?" এখন তো টাপাল ফোটবার সময়ও নয়। বড় মুগন্ধ ফুলটার যে অজানা ফুলই হোক রনের,-অন্ধকারের মধ্যে নির্জন আকাশতলে তার এই প্রাণগলা আত্ম-নিবেদন নিশ্চয় ব্যর্থ নয়। বিশ্বের বড় গেরস্থালিতে এতটুকু জিনিসের অপচয় হবার জো নেই! অদ্ভূত গম্ভীর শোভা এই নিবিড নিজন অরণ্যানীর। মাথার ওপরে ঝকৃঝকে তারা ছিটানে। আকাশ, চারিধারে শৈলশ্রেণী, তাদের ছোট বড় চূড়া ধেন আকাশের গায়ে ঠেকেছে —মাঝে মাঝে দু একটা রাত-জাগা পাখীর ডাক, সৰ্ব্বোপরি একটা গহন গভীর রহস্ত যেন এই রাত্রে এই বনভূমির অঙ্গে অঙ্গে মাখানে । শোওয়া কি যায় ? এমন রান্ত্রি নিদ্রার জন্তে তৈরী হয় নি। —আমরা জেগে বসে থাকি, কি বলেন মিঃ সিংহ ? —খুব ভালো । মনে হোল এমন বিরাট অরণ্য কখনো দেখি নি জীবনে। এমন বিরাট বনস্পতি শ্রেণীর সমাবেশ, সঙ্গে সঙ্গে এই অদ্ভূত-দর্শন শৈলশ্রেণী—দুইয়ের এই যোগাযোগই এই অরণ্যকে সুন্দরতর, অধিকতর রহস্যময় করচে , এ দেখবার স্বযোগ বা ক'জনের ভাগ্যে ঘটে? রেলপথের নিকটবর্তী স্থানসমূহে অনেকে সহজেই যেতে পারেন বটে, যেমন মধুপুর, শিমুলতলা ইত্যাদি, কিন্তু সে সব স্থানে মানুষের ভিড়, ছোট বড় ঘরবাড়ীর ভিড় । দূরে বা নিকটে এমন ধরণের অরণ্য নেই। দেওঘর থেকে ১৪১৫ মাইল দূরে এক বিরাট জঙ্গল আছে বটে, কান্নিবেলের জঙ্গল ; সেটা লছমীপুর গাড়োয়ালি স্টেটের অন্তভূক্ত। আমি একবার ভাগলপুর থেকে দেওঘর পৰ্য্যস্ত পদব্রঙ্গে আসি সেই ঘন বনের মধ্যে দিয়ে। সে বন বড় একটা মালভূমির ওপর, তার শেষ প্রান্ত থেকে দূরস্থিত ত্রিকূট পাহাড় নীলমেঘের মত দেখা যায়, কিন্তু সে এমন শৈলমালাবেষ্টিত নয়, এত বড় বনস্পতির সমাবেশও নেই সেখানে। স্টেটের লোক কাঠ বেচে জঙ্গল