পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লাহোর বেষ্টিত এবং তাহার চতুষ্পার্থে পরিখা ও নগররক্ষণোপযোগী দুগ বুরুজাদিও বিনিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। পরে ঐ পরিখা ভরাট করিয়া দেওয়া হয় এবং পূৰ্ব্বতন ৩• ফিট, উচ্চ প্রাচীর ভগ্ন হওয়ায় সংস্কারকালে উহার চতুর্দিকে ১৬ ফিট, উচ্চ প্রাচীর এষ্ঠিত হইয়াছে। প্রাচীরের চতুষ্পার্শ্ব উক্ত পরিখার পরিবত্ত্বে এক্ষণে নানা জাতীয় বৃক্ষপূর্ণ উদ্যানে পরিশোভিত হইয়া নগরের চতুর্দিক বেষ্টন করিতেছে, কেবল মাত্র উত্তরদিকের কতক স্থান থালি অাছে। ইরাবতী নদীর পলিময় সৈকতোপরি এই নগর স্থাপিত হইলেও কালবশে বর্তমান নগরস্থান উচ্চ স্তপে পরিণত হইয়াছে। নগরের বপ্রস্থানের বহির্ভাগে একটী পাকা রাস্ত নগরকে বেষ্টন করিয়াছে। ঐ পথ দিয়া প্রাচীরগাত্রস্থ ১৩ট দ্বারপথে । নগরে প্রবেশ করা যায়। নগরের উত্তরপূৰ্ব্বকোণে প্রাচীন নদীখাত পৰ্য্যন্ত লাহোর গর্ণ বিস্তৃত। দুগের সন্মুখস্থ ময়দান দক্ষিণ ও পূৰ্ব্বদিকে বিস্তৃত রহিয়াছে। লাহোর নগরের রাস্তীগুলি সরু ও বক্রাকার হওয়ায় এবং তথাকার অট্টালিকাগুলি উন্নত মস্তকে ও শ্রেণীবদ্ধভাবে বিলম্বিত থাকায় নগরের কোনরূপ শোভা সম্পাদিত হয় নাই। ঘেসা ঘেসী বাড়ী থাকায় রাস্তাগুলি স্বভাবতঃই দেখিতে কদৰ্য্য, কিন্তু মোগলসম্রাট্রগণের রাজাকালে যে সকল অত্যুৎকৃষ্ট ও শিল্পনৈপুণ্যসমন্বিত সুবৃহৎ অট্টালিকা নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল, তাহা স্থানীয় সাধারণ অট্টালিকাদির স্থাপত্যশিল্পের অভাব ঘুচাইয়া চিত্তবিনোদনে সমর্থ হইয়াছে। মোগলকীৰ্ত্তির মধ্যে নগরের উত্তরপূৰ্ব্বকোণে স্থাপিত অরঙ্গজেবের মসজিদ ও রণজিৎ সিংহের সমাধিমন্দির বিশেষরূপে উল্লেখযোগ্য। মস্জিদের শ্বেত মৰ্ম্মর নিৰ্ম্মিত গুম্বেজ ও চুড়াস্তম্ভগুলি ; রণজিতের সমাধিমন্দিরের বারাগু ও গোল ছাদ এবং অপব্যবহৃত ও অপবিত্রীকৃত মোগলপ্রাসাদের সন্মুখদেশ ভারতীয় স্থাপত্যশিল্পসৌন্দর্য্যের উৎকৃষ্ট নিদর্শন। নগরপ্রাচীরের বহির্ভাগে লাহোরী দ্বারের সম্মুখে একটা রাস্ত দক্ষিণাভিমুখে আসিয়াছে। উহা আর্ণাকালী বা সদরবাজার রাস্ত নামে খ্যাত। ঐ পথ দেশীয় নগরভাগ যুরোপীয় নিবাসের ও আর্ণাকালীর পূৰ্ব্বতন সেনানিবাসের সহিত সংযুক্ত। লাহোর নগরের যুরোপীয় বিভাগে রাজকীয় কাৰ্য্যালয়সমূহ, আদালত ও ষ্টেশনচার্চ বিদ্যমান আছে। আর্ণাকালী হইতে পূৰ্ব্বাভিমুখে লরেন্স উদ্যান ও গবমেণ্ট হাউস্ পর্য্যন্ত প্রায় ৩ মাইল বিস্তৃত স্থানে যুরোপীয়গণের যে নুতন বসতি হইয়াছে, তাহা ডোনাল্ডটাউন নামে পরিচিত। স্থানীয় ছোটলাট সর ডোনাল্ড মাকৃলিওডের নামানুসারে ঐ নগরের নামকরণ হয় । XVII 妙8 [ २4७ ] লাহোরি বন্দর মল (Mall) নামক প্রশস্ত রাস্ত এই যুরোপীয় নগরভাগের মধ্য দিয়া আর্ণাকালী পৰ্য্যন্ত গিয়াছে। এই রাস্তার উত্তরাংশে রেলষ্টেসন ও রেলওয়ে কৰ্ম্মচারীদিগের বাসস্থান এবং উহার দক্ষিণে মুজঙ্গ নামক নগরোপকণ্ঠে যুরোপীয়গণের বাসভবন इट्टे श्ब्र। লাহোর নগরে নিম্নোক্ত কয়ট রাজকীয় ও শিক্ষাবিভাগীয় প্রধান অট্টালিকা দৃষ্ট হয়; তন্মধ্যে পঞ্জাব-ইউনিভার্সিট ও সেনেট হল (দেশীয় রাজা ও নবাববৃন্দের চাদায় প্রতিষ্ঠিত), ওরিএন্টাল কলেজ, লাহোর গবমেণ্ট কলেজ, মেডিকাল স্কুল, সেন্টালট্রেনিং কলেজ, ল’স্কুল, ভেটারিনারী স্কুল, লাহোর হাইস্কুল, মেও হাসপাতাল, মিউজিয়ম, রবার্টুস ইনিষ্টিটিউটু,লরেন্সও মন্টগোমী হল এবং এগ্রিহটিকালচারাল সোসাইট গৃহ দেখিবার সামগ্রী। এখানকার প্রস্তুত রেশমি বস্ত্র, শাল, সোণালী ও রূপালী সাচ্চ জরি, ধাতব পাত্র, পাথরের খেলান ও শস্তাদির বিস্তৃত কারবার আছে। রেলপথে করাচী বন্দরে আনীত হইয়া অনেক মাল পত্র পোত যোগে বিদেশে রপ্তানী হইয়া থাকে। কলিকাতা, অম্বালা, পেশবার, মূলতান ও দিল্লী প্রভৃতি ভারতের প্রসিদ্ধ নগরে আবশুক মত তদেশবাসিকর্তৃক দ্রব্যাদি প্রেরিত হইতেছে। স্থানীয় এবং যুরোপীয় বণিক্সমিতির অর্থসমাগমের সচ্ছলতা নিবন্ধন এখানে বেঙ্গল ব্যাঙ্ক, আগ্র ব্যাঙ্ক, সিমলা ব্যাঙ্ক ও এলায়েন্স ব্যাঙ্ক অব সিমলা প্রভৃতি অনেকগুলি ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত আছে । লাহোরিবন্দর, বোম্বাই-প্রসিডেন্সীর সিন্ধু প্রদেশের করাচীর অস্তগত একটা প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ বন্দর। সিন্ধু নদের পশ্চিমাভিমুখে প্রবাহিত বাঘিয়ার নামক শাখার বামকুলে অবস্থিত। অক্ষা, ২৪°৩২'উঃ এবং দ্রাঘি” ৬৭২৮ পূঃ । পিতি মোহানা হইতে ১• ক্রোশ অদূরে অবস্থিত। সমুদ্রের এই খাড়ির মুখে মৃত্তিক পড়ায় খাতের গভীরতা ক্রমশঃ কমিয়া আসিতেছে। এক্ষণে পণ্যদ্রব্যবাহী ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পোত সকল সেই থাড়ি দিয়া বন্দরে আসিতে পারে না। মর্ণটন বলেন, ১৬৯৯ খৃ: অব্দে ইহা সিন্ধুপ্রদেশের একটী প্রসিদ্ধ বন্দর বলিয়া পরিগণিত ছিল এবং ২০০ টন বোঝাই এইরূপ পোতগুলি অনায়াসে এ বন্দরে প্রবেশ করিয়া মাল পত্র লইয়া যাইত। অষ্টাদশ শতাদের শেষভাগে এখানে ইংরাজ বণিক্দিগের একটী কুঠী প্রতিষ্ঠিত ছিল। এই স্থানের প্রকৃত নাম লাড়ী-বন্দর, কারণ ইহা প্রাচীন লাট বা লাড়দেশের অন্তভুক্ত বলিয়া ঐন্ধপ নামকরণ হয় । পরে মুসলমান ঐতিহাসিকগণ উহাকে পঞ্জাবের নিকটবৰ্ত্তা জানিয়া লাহোর নগরের নামানুসারে উহার লাহোরী বন্দর নাম দেন। ১৯৩০ খৃষ্টাব্দে আলবিরুণী এই নগরকে লহরাণী