পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদেশ ( সৌরপ্রস্তাব ) go চক্ষে দেখিতেন, সেজন্ত ঐ সকল স্থানের হিন্দুকীৰ্ত্তিসমূহ লিপিবন্ধ করা আবশুক মনে করেন মাই। কর্ণসুবর্ণ (মুর্শিদাবাদ জেলাস্থ রাঙ্গামাট ) ও তন্নিকটবৰ্ত্তা প্রাচীনু ইষ্টকন্তুপ মধ্য হইতে সময়ে সময়ে এখানকার গুপ্তরাজগণের সময়ে প্রচলিত বহু স্বর্ণমুদ্রা বাহির হইয়াছে, তাহা হইতে রবিগুপ্ত, জয়মহারাজ, নরগুপ্ত, প্রকটাদিত্য, ক্রমাদিত্য, বিষ্ণুগুপ্ত, চন্দ্রাদিত্য প্রভৃতি নাম পাওয়া গিয়াছে। এই সকল গুপ্তরাজগণ কে কোন সময়ে রাজত্ব করেন, তাহ জানিবার উপকরণ এখনও বাহির হয় নাই। র্তাহাদের মধ্যে নরগুপ্ত বা শশাঙ্ক নরেন্দ্রগুপ্তের নাম ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। তিনি এক জন ঘোরতর বৌদ্ধবিদ্বেষী ছিলেন। তিনি বোধগয়ার বোধিক্রম সমূলে উৎপাটত করিবার আয়োজন করেন এবং গ্রহশাস্তি ও পৌষ্টিক কৰ্ম্মাদি সম্পাদনের জন্ত বহু শাবদ্বীপী ব্রাহ্মণ আনাইয়া গৌড়ে বাস করাইয়াছিলেন + প্রায় ৬০৬ খৃষ্টাব্দে তিনি হর্ষের জ্যেষ্ঠ ভ্রাত কনোজপতি রাজ্যবৰ্দ্ধনকে নিহত করেন, তাহার প্রতিশোধ লইবার জন্য সম্রাটু হর্ষবৰ্দ্ধন সসৈন্তে আসিয়া শশাঙ্কের রাজ্যধ্বংস ও তাহাকে বিনাশ করেন। শশাঙ্কের সহিত ব্রাহ্মণ্য প্রভাব কিছু দিনের জন্য এ দেশ হইতে অন্তৰ্হিত হইল। এমন কি, তৎকালে এ দেশে বেদবিৎ কৰ্ম্মঠ ব্রাহ্মণ ছিলেন না। তাই ত্রিপুরপতি ধৰ্ম্মপালকে ৬৪১ খৃষ্টাব্দে মিথিলা হইতে বেদবিং ব্রাহ্মণ আনাইতে হইয়াছিল । হৰ্ষবৰ্দ্ধন আৰ্য্যাবৰ্ত্তের সম্রাটু হইলে গৌড়রাজ্য র্তাহার শাসনাধীন হইয়াছিল। এ সময়ে গৌড়বঙ্গ হিরণ্যপৰ্ব্বত (মুঙ্গের), চম্প ( ভাগলপুর জেলা ), কজঘির, পুণ্ড বৰ্দ্ধন ( মালদহ ও বগুড়া জেলা ), সমতট ( পুৰ্ব্ববঙ্গ), তাম্রলিপ্ত (তমলুক মহকুমা ও মেদিনীপুর জেলার অধিকাংশ ), এবং কর্ণসুবর্ণ (বর্তমান রাঢ়ভূভাগ ) এই কয়টা ভিন্ন প্রদেশে বিভক্ত এবং বিভিন্ন সামস্তরাজের শাসনাধীন ছিল । চীন-পরিত্রাজক হিউএ সিয়ং ঐ সকল জনপদে হিন্দু ও বৌদ্ধ উভয় সম্প্রদায়ের সজারাম, মঠ ও দেবমন্দির দেখিয়া গিয়াছেন। তিনি কর্ণসুবৰ্ণবাসী জন সাধারণের গৃহ ধনধান্তে পরিপূর্ণ, পুণ্ড বৰ্দ্ধনের জনতা ও নানা ফলফুলশালিতা, সমতটে বহু পণ্ডিতের সমাবেশ এবং তাম্রলিপ্তে বাণিজ্যসমারোহ দেখিয়া চমৎকৃত হইয়াছিলেন। হৰ্ষবৰ্দ্ধনের মৃত্যুর সহিত বৰ্দ্ধন-সাম্রাজ্য ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হইলে মগধে গুপ্তবংশীয় আদিত্যসেন প্রবল হইয়া মহারাজাধিরাজ উপাধি ও পূৰ্ব্ব ভারতের অধিকাংশ রাজ্য গ্রহণ করেন। তিনি ও তাহার বংশধরগণের মধ্যে অনেকে সৌর ছিলেন এবং

+ মঙ্গেয় জাতীয় ইতিংগ খ ভাগ (ব্রাহ্মণকাও )৪র্থ অংশ দ্রষ্টব্য । XVII & 3 & 8 [ ৪১৩ ] বঙ্গদেশ ( বৌদ্ধপ্রভাব ) র্তাহাদের যত্নে পুৰ্ব্ব ভারতে অনেকেই সেীর মতাবলম্বী হইয়াছিল। ইহারই কিছু কাল পরে ভগদত্তবংশীয় ভাস্করবর্ধার বংশধর কামরূপপতি হর্ষদেব গৌড়, উড়, কলিঙ্গ ও কোশল জয় করিয়া এক জন পরাক্রান্ত অধীশ্বর হইয়াছিলেন। তিনি নেপালের প্রতাপশালী লিচ্ছবি ও মগধের গুপ্তরাজবংশের সহিত বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করিয়াছিলেন। কপিরূপপতি হর্ষের ভাগ্যে বহু দিন রাজ্যভোগ ঘটে নাই । ইহারই অত্যয় কালে পরে মগধে প্রাধান্ত লইয় গুপ্ত ও মৌখরিবংশে দারুণ বিবাদ উপস্থিত হয়, তাহাতে উভয় পক্ষই হীনবল হইয়া পড়েন। সেই সময়ে কাশ্মীরপতি ললিতাদিত্য গৌড় আক্রমণ করেন । এ সময়ে পরাজিত গৌড়পতি ললিতাদিত্যের প্রসাদলাভাশায় কাশ্মীরে গমন করেন । কাশ্মীরপতি গৌড়পতিকে বলেন যে, পরিহাস-কেশবের অনুগ্রহে তাহার প্রাণ রাথিয়াছেন মাত্র। অথচ তিনি ত্রিগ্রামী নামক স্থানে এক নরহস্ত দ্বারা তাহার বধ সাধন করিলেন। তৎকালে গৌড়রাজ্যের প্রজাসাধারণ অতিশয় রাজভক্ত ও বীরপুরুষাগণ্য ছিল । কএক জন রাজভক্ত বীর কাশ্মীর রাজ্যে এই দুষ্কার্য্যের প্রতিশোধ লইলার আশায় সরস্বতীদর্শনমানসে উপস্থিত হইয়ু পরিহাসকেশবের মন্দিরাভিমুখে এক দিম সহসা অগ্রসর হইল। ললিতাদিত্য তখন সেখানে ছিলেন না। গৌড়বীরের মন্দির আক্রমণ করিবে জানিতে পারিয়া ব্রাহ্মণেবা পূর্বেই মন্দিরের কবাট বন্ধ করিয়া দিয়াছিলেন। কিন্তু গৌড়ীয়গণ রামস্বামীর মন্দিরকেই শ্রীপরিহাসকেশবের মন্দির ভাৰিয়া মন্দির ধ্বংস করিল ও দেবমূৰ্ত্তি চূর্ণ বিচূর্ণ করিয়া ফেলিল। অল্পকাল মধ্যেই সাগরতরঙ্গের মত কাশ্মীর সৈন্ত আসিয়া পড়িল। মুষ্টিমের গৌড়ীয়দিগের সহিত তাহদের ঘোরতর যুদ্ধ বাধিল । রাজভক্ত গৌড়বাসী একে একে সকলেই প্রাণদান করিল। ধন্ত বাঙ্গালীর রাজভক্তি ! ধন্ত সাহস ! কাশ্মীরের ঐতিহাসিক কলহণ সেই ঘটনা উপলক্ষ করিয়া লিথিয়াছেন— “তীয়কুধিয়াপারে; সমভূচুম্বলীকৃত। স্বামিগুক্তিরসীমাগু ধগু চেয়ং বসুন্ধর ॥৩৩১ অদ্যপি দৃষ্ঠতে শূন্তং রামস্বমিপুরাশ । ব্ৰহ্মাণ্ডং গৌড়বীরাণাং সনাথং যশসা পুণ: " ( রাজতরঙ্গিণী ৫।৩৩৫ ) অর্থাৎ তাঁহাদের রুধিরধারায় অসামান্ত স্বামিভক্তি আরও উজ্জলীকৃত হইয়া বসুন্ধর ধন্ত হইয়াiছল। অদ্যাপি রামস্বামীর গৌরবাস্পদ মন্দির শুষ্ঠ রহিয়াছে বটে, কিন্তু তাহা ভূমণ্ডলে গৌড়বীরগণের যশোরাশি ঘোষণা করিতেছে ! কাশ্মীরপতির গৌড় আক্রমণ ও গৌড়পতির কাশ্মীর গমন হেতু গৌড়রাজ্যে অরাজকতা উপস্থিত হয়। এই সুযোগে