পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৬২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৰ্দ্ধনকোট [ ७२8 ] বৰ্দ্ধনকোট পূৰ্ব্বক পূজা করে। তাহার শবদেহ দাহান্তে ভষ্ম বা অস্থি লইয়া গঙ্গা বা কোন নদীর জলে নিক্ষেপ করিয়া থাকে । সাধুপুরুষদিগের সমাধিস্থানের উপর তাহারা আশ্বিনমাসের মহালয়ার দিন জল দেয় এবং ত্রয়োদশী তিথিতে সেই স্থলে চাউল ও ছুখ দিয়া ব্রাহ্মণদিগকে কিছু খাদ্য দ্রব্যাদি দান করিয়া থাকে। বসন্ত বা বিশ্বচিক রোগে মৃত্যু ঘটিলে তাহার শবদেহ প্রোথিত করে অথবা নদীর জলে ভাসাইয়া দেয়। ভিন্ন দেশে কোন আত্মীয় বা স্বজনের মৃত্যু ঘটলে তাহারা কুশপুত্তলিকা দাহ করে। বেহারের বড় হিরা জলচরণীয়। তাহারা উগ্ৰমহারাজ, বনি, গোরাইয়া ও পাচপীর প্রভৃতি গ্রাম্য দেবতার পূজা করে। গোয়াল, কোইরী, হজাম প্রভৃতির ন্তায় তাহারা সমাজে তুল্য আসন পাইয়া থাকে। কাঠেব কাৰ্য্য ব্যতীত তাহারা চাষবাস ও করে ! বৰ্দ্ধন (ত্রি ) বৰ্দ্ধয়তীতি বৃধ-নন্দ্যাদিত্বাং লু, যদ্বা বদ্ধতে তচ্ছল ইতি বৃধ-পূৰ্ত্তেী (অনুদাত্ত্বেতশ্চেতি। পাতা২।১৪৯) ইতি যুচ । ১ বদ্ধিষ্ণু, বৰ্দ্ধনশীল। ২ বৃদ্ধি, উন্নতি । ৩ বাড়ান। ৪ পুরণ। ৫ ছেদন । ৬ বৃদ্ধিকারক। বৰ্দ্ধনকোট, বেৰ্দ্ধনকুট)—বগুড়া জেলার অন্তর্গত বগুড়া হইতে উত্তরে অক্ষা ২৫°৮২৫ উঃ ও দ্রাঘি• ৮৯’২৮ পূঃ, গোবিন্দগঞ্জের নিকট, করতোয় নদীতীকে অবস্থিত। এক্ষণে রাজবাড়ী নামে খ্যাত। কাহারও মতে, এখানে এক সময়ে প্রাচীন পেগু, বৰ্দ্ধনরাজ্যের রাজধানী ছিল। সংস্কৃত ব্ৰহ্মখণ্ডের মতে, বৰ্দ্ধনকোট নিবৃত্তি দেশের অন্তর্গত। এক্ষণে প্রাচীন রাজবাড়ীর ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হয়। বর্তমাম কালেও বৰ্দ্ধনকোটে এক ৰারেন্দ্র কায়স্থ রাজবংশ বিদ্যমান । বন্ধনকুটার-রাজবংশ। বৰ্দ্ধনকুট বহুকাল বারেন্দ্র কায়স্থের অধিকারে ছিল । এখানকার ইতিবৃত্ত হইতে জানা যায় যে, খৃষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দে আলম্যান গোত্রীয় দেববংশে রাজেন্দ্র নামে এক ব্যক্তি প্রবল হইয়া ইদরাকপুরের অন্তর্গত বহু ভূসম্পত্তি অধিকার কবিয়া বসেন। কোম্পানীর আমলে গুড়লাড সাহেব ইদ্রাকৃপুরের যে রাজবিবরণ সংগ্রহ করেন, তাহা হইতে জানা যায় যে, এখানকার প্রথম রাজার নাম রাজেন্দ্র, তৎপরে বংশামুক্রমে রাজা ভগীরথ, রাজা দুর্গাকান্ত, রাজা তুর্গা প্রসাদ, রাজা রামদুলাল, রাজা গোপীরমণ, রাজা অমরকান্ত, রাজা গৌরহরি, রাজা আৰ্য্যাবর ও আর্য্যাবরের পুত্র রাজা ভগবান রাজত্ব করেন। • বারেঞ্জ কায়স্থগণের ঢাকুর নামক কুলগ্রন্থে লিখিত আছে,—

  • Mr. Goodlad's Account of Edrakpur, no, 12. p. 69.

“তৎপরে কহি এক দেব পরিপাটী। আৰ্য্যাবর মণ্ডল বাস কৈলা বৰ্দ্ধনকুটী ॥ তার পুত্র ভগবান করিয়া চাতুরী। রাজা ভগবান মৈলে নিলা জমিদারী। যবে মানসিংহ রাজা বাঙ্গালাতে আইলা । নয় আনা সাত আন ভূমি বণ্টন করিলা ॥ ক্রমে ক্রমে ভাগ্যলক্ষ্মী প্রচুর হইল । হস্তী নিশা রাজটীকা পাতসা করিল। তাহার সস্তান হইল কুমুদানন্দন। তস্ত পুত্র রঘুনাথ বড়ই সদ্‌গুণ ॥ মনোহর তস্ত সুত তন্ত পুত্র হরি। রাজা বিশ্বনাথ তস্ত সুত গিরিধারী। প্রধান বারেন্দ্র সমে কুলক্রিয়া কৈল। কুলীন সমাজ মাঝে মর্য্যাদা পাইল । নিরাবিল সিদ্ধ ঘরে হইল করণ। সেই অনুসারে দেব হইল চলন ৷” বৰ্দ্ধনকুটার নিকটবৰ্ত্তী রামপুরের বাসুদেবের মন্দিরে এইরূপ ইষ্টকখোদিত লিপি পাওয়া যায়— “গুণাক্ষিশরচন্দ্রেণ যুতে শাকে ভবচ্ছিদে । ভবান্ধিভীতো ভগবান দদৌ ঐবিঞ্চবে মঠম্।” অর্থাৎ সংসারসাগরভীত ভগবান ১৫২৩ শকে অর্থাৎ ১৬০১ খৃষ্টাব্দে ভবভয়হারী শ্ৰীবিষ্ণুর উদ্দেশ্যে এই মঠ দান করেন। উক্ত প্রমাণ অনুসারে খৃষ্টীয় ১৬শ শতাবে আর্য্যাবব মণ্ডলের অভু্যদয় স্বীকার করিতে হয় । মিঃ গুড লাড সাহেব ১৭৮১ খৃষ্টাব্দে লিথিয়াছেন যে, রাজা আৰ্য্যাবরের পুত্র রাজা ভগবান নিবোধ ছিলেন । এই রাজা ভগবানের দেওয়ানের নামও ভগবান ছিল। দেওয়ান সুবিধা মত শখনকার ঢাকার মুবাদারকে উৎকোচ দিয়া নিজ নামে সম্পত্তি লিখাইয়া লইলেন। অল্প দিন পরেই রাজা তাহ জানিতে পারিলেন । তৎপরে উভয়ে গুরুতর বিবাদ উপস্থিত হইল। রাজার পক্ষ হইতে এ সময় দরবারহইয়াছিল। দীর্ঘকাল দরবারের পর স্থির হয় যে, রাজা নয় আনা ও দেওয়ান সাত আন অংশ পাইৰে । এই সাত আন দিনাজপুর রাজ্যের অন্তর্গত হইয়াছিল। - কিন্তু ঢাকুরের উক্তি পাঠ করিলে একটু গোলে পড়িতে হয়, আৰ্য্যাবরের পূৰ্ব্বে এই বংশ রাজোপাধিতে ভূষিত ছিলেন কি না, সন্দেহের বিষয় হয়। আৰ্য্যাবরের “মওল” উপাধি দৃষ্টে মনে হয়, এই বংশ পূৰ্ব্ব হইতেই সম্পত্তিশালী ছিলেন। তৎপুত্র ভগৱান বৰ্দ্ধনকুটার দেওয়ান ছিলেন কি না, সে বিষয় সন্দেহ আছে। দেওয়ান থাকিলে বারেত্র ঢাকুরকার সে কথা লিখিতে