পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৭৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৌদ্ধধৰ্ম্ম গমন করিয়া সমুদয় বৃত্তান্ত বলিলেন। এদিকে যে সকল অর্থৎকে সংবাদ দেওয়া হইয়াছিল, তাহারা সকলে আসিয়া এই স্থানে সসমবেত হইলেন । কিছুকাল তর্ক বিতর্কের পর স্থির হইল যে, সোর্যে্যবাসী রেবতকে এই বিষয়ে সম্মত করান আবশ্যক, বেত, আগম, ধৰ্ম্ম, বিনয় প্রভৃতি সৰ্ব্বশাস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন । এদিকে রেবত, যোগবলে স্থবিরগণের অভিপ্রায় জানিতে পারিয়া এবং এই বিরোধ হইতে দূরে থাকিতে ইচ্ছা করিয়া নিজ স্থান ছাড়িয়া সাঙ্কাগু নামক স্থানে গমন করিলেন । ভিক্ষুগণ র্তাহার অনুসন্ধানে সেইস্থানে গিয়া দেখিলেন যে তিনি সেখান হইতে কনৌজে গিয়াছেন। অনেক চেষ্টার পরে সহজাতি নামক স্থানে তাহার দর্শন পাওয়া গেল। উল্লিখিত দশকৰ্ম্ম নীতি সঙ্গত । কিনা জিজ্ঞাসা কবীয় তিনি উত্তর প্রদান কারলেন, “ইহা অবৈধ।” যশস্ তখন তঁহাকে অমুরোধ করিলেন যে, এই গুণতি সৰ্ব্ব সাধারণের মধ্যে প্রসারিত হইবার পূৰ্ব্বেই ইহা নিবারণ করা কর্তব্য। এদিকে বৃজ্জি ভিক্ষুগণ রেবতকে হস্তগত করার জন্ত সহগুতিতে গমন করিলেন । তাহার শিষ্য উক্তবকে বহু উৎকোচ এবং রেবতকে নানারূপ উপহার প্রদান দ্বারা বশীভূত করিবার বচ্চ চেষ্টা করিয়া ও ভিক্ষুগণ কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিলেন না । মীমাংসার জন্য যখন সকলে একত্র হইলেন, তখন রেবত প্রস্তাব করিলেন যে যে স্থানে এই প্রশ্ন উঠিয়াছে, সেই স্থানে বসিয়াই ইহার মীমাংসা করা কৰ্ত্তব্য । সকলে এই প্রস্তাবে সম্মত হইলে ভিক্ষুগণ বৈশালীতে সমবেত হইলেন । সেই সময় উক্ত নগরীতে একজন প্রসিদ্ধ বৃদ্ধ স্থবির বাস করিতেন, তাহার নাম সৰ্ব্বকামিন ( সৰ্ব্বকামী । ইনি ১২০ বৎসর পূৰ্ব্বে উপসম্পদ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন । রেবত এবং সম্ভত র্তাহার নিকট এই কথা জ্ঞাপন করিলে তিনিও তাহাদের প্রস্তাবে সন্মতি প্রদান করিলেন । যখন মহাসভার অধিবেশন হইল, তখন নানারূপ গোলমোরে প্রশ্নের মীমাংসা হইয়া উঠিল মা। তখন রেবত প্রস্তাব করলেন যে, আটজন শ্রমণের উপর এই গ্রশ্নের মীমাংসার ভাৰু অর্পিত হউক । আটজনের মধ্যে চারিজন পূৰ্ব্বদেশীয় এবং চরিঞ্জন পশ্চিম দেশীয় হইবেন । তদনুসারে পূৰ্ব্বদেশীয় হইতে সৰ্ব্বকামী, সাঢ় ছ, খুজসোভিত ও বাসভগামিক এবং পশ্চিম দেশীয় হইতে রেবত সম্ভত, যশস ও স্বমন এই আটজন [ १७४ ] নিৰ্বাচিত হইলেন। বালিকারাম নামক নির্জন স্থানে তাহাম্বের এই সমিতির অধিবেশন হইল । এই সমিতির কৰ্ম্মপ্রণালী নিম্নলিখিত রূপে সম্পন্ন হইয়া ছিল । রেবত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিরছিলেন এবং সৰ্ব্বকামী বৌদ্ধধৰ্ম্ম প্রতি প্রশ্নের শাস্ত্র সঙ্গত উত্তর প্রদান করিয়াছিলেন। যে দশবিধ কাৰ্য্যের কথা লইয়া প্রশ্ন উঠিয়াছিল, তাহার প্রতি প্রশ্নেই বৃদ্ধি ভিক্ষুগণের বিরুদ্ধে মীমাংসা হইল। দশীথ-ই অবৈধ বলিয়া স্থিরীকৃত হইল । কোন কোন গ্রন্থে ইহাও দেখা যায় যে এই বিচারে সস্তুষ্ট ন হইয় অনেক ভিক্ষু আর একসভা করিয়াছিলেন । এই ধৰ্ম্ম-সভার নাম মহাসঙ্গীতি। কিন্তু কোন স্থানে এই সঙ্গীতির অধিবেশন হয় এবং কি কি কার্য হয় অথবা কাহার। ইহার নেতা ছিলেন, তাহার প্রকৃত বিবরণ উদ্ধার করা অসম্ভব । বৈশালীর উক্ত সঙ্গীতি সম্বন্ধে আরও নানারূপ বিৰয়ণ দেখা যায়। কোন সময়ে ইহার অধিবেশন হয় তাহা নির্দেশ করাই সৰ্ব্বাপেক্ষ মুকঠিন। আধুনিক পণ্ডিতেরা অনেক গবেষণা ও আলোচনা করিয়াও ইছার প্রকৃত তথ্য নিদ্ধারণ করিতে পারেন নাই। একস্থানে দেখিতে পাওয়া যায় যে বুদ্ধদেব ভবিষ্যৎ বাণী করিয়াছিলেন,—“আমরা পরিনিৰ্ব্বাণের চারি মাস পরে সঙ্ঘের প্রথম সন্মিলন হইবে এবং ১১৮ বৎসর পরে বৌদ্ধধৰ্ম্মপ্রচারের জন্য দ্বিতীয় সম্মিলন হইবে । এষ্ট সময়ে ধৰ্ম্মাশোক নামে এক মহা ধাৰ্ম্মিক ও প্রতাপশালী নরপতি জম্বদ্বীপে রাজত্ব করিবেন।” কোন কোন বিবরণে দেখা যায় যে, স্থবির যশস্ যে কালে এই আন্দোলন উপস্থিত করেন, তখন কালাশোক নামে এক ব্যক্তি রাজা ছিলেন । সে সময়ে কালাশোক কি ধৰ্ম্মাশোক রাজা ছিলেন, ইহা লইয়া অনেক বাদামুবাদ হইয়া গিয়াছে, কিন্তু স্থির মীমাংস কিছুই হয় নাই । বৈশালীর সঙ্গীতি সম্বন্ধে যে সকল বিবরণ বা মতামণ্ড আছে তাহার সমুদয় পৰ্য্যালোচনা করিয়া যাহা বুঝিতে পারা যায়, তাহ। এই :-বৈশালীতে সঙ্ঘের এক সন্মিলন হইয়াছিল এবং তাহাতে ‘বিনয়” সম্বন্ধেই আলোচনা হইয়াছিল। মহাসঙ্গীতি বা মহাসঙ্ঘিকের বহুপূৰ্ব্বে এই সন্মিলন হইয়াছিল এবং ইহাস সহিত মহাসক্তিত্বকগণের কোন সংপ্ৰবই নাই। অনেকের মস্তে বুদ্ধদেবের নির্মাণ-প্রাপ্তির একশত দশ বৎসর পরে এই जबौउिब्र অধিবেশন হয় । পাটলিপুত্রের সঙ্গীতি সৰ্ব্বশ্রেণীর বৌদ্ধভিক্ষুগণের সন্মিলন নছে। এই সন্মিলনে কেবল বিস্তুজ্যবাদী শ্রমণগণ একত্ৰু হইয়াপাটলিপুত্রে ছিলেন । মহাসঙ্গীতির বহু পরে এই সন্মিলন শুধু সঙ্গীতি হয় এবং মহাসঙ্ঘিকগণ এই সভায় যোগদান করেন নাই । কথিত আছে, সম্রাট অশোকের অভিষেকের অষ্টাদশ পরে এই সঙ্গীতির অধিবেশন হয়। এই সভ্যতার বিবরণ বর্ষ সম্বন্ধেও নানারূপ কল্পিত গল্প এবং উপকথা বর্ণিত আছে।