পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আকবর অকল্য (ত্রি) ন কলা-বৎ। ন কলাম্ব আরোগ্যেযু সাধু । নঞ তৎ। রোগী । অকল্যাণ (ক্লী) ন-কল্য-অণ-ঘঞ। অমঙ্গল। অগুভ। অকবর। আবদুল কত জেলালুদ্ধি মন্ধ পাদিশা-ই-গাজী। সচরাচর ইহঁাকে আমরা আকবার বাদশা বলিয়া থাকি। দিল্লির সম্রাট, হুমায়ুনের পুত্ৰ। ইছার মাতার নাম মুল্য তান হমিদ বায়ুবেগম। ১৫৪২ খৃঃ অন্ধে ১৫ই অক্টোবর (মুসলমান রজব মাস, ৯৪° ফসলী) রবিবার আকবরের জন্ম। ১৫৫৬ খৃঃ অব্দে ১৩ বৎসর নয় মাস বয়ঃক্রমে সিংহাসনে অধিরূঢ় হন; ৫১ বৎসর রাজত্ব করিয়া ১৬০৭ খৃঃ অন্ধে অনুনি ৬৫ বৎসর বয়ঃক্রমে ইহলোক পরিত্যাগ করেন । আকবর কে ?—এ নাম ভারতবর্ষের হিন্দুমুসলমানের কাছে আজি নূতন নয় । এখনও অনেক গৃহস্থের ঘরে আকবরী মোহর রহিয়াছে, হিন্দুরাও পুষ্পচন্দনে সেই মোহরের পূজা করিতেছেন। মহাপ্রাণ ব্যক্তি জন্ম লইবার পূৰ্ব্বে তাছার পিতামাতার দিন সহজে যায় না, এ ঘটনা চারি যুগ চলিয়া আদিতেছে । অকবর গর্ভে, শের র্থ। আসিয়া দিল্লির সিংহাসন কাড়িয়া লইলেন । দুঃসময়ে মানুষের বন্ধু থাকে না। দরিদ্রের থাকে না, সদ্বীপা পৃথিবীর যিনি অধীশ্বব—সময়দোষে র্তাহারও বন্ধু ছাড়িয়া যায়। হুমায়ুন এখন রাজ্যভ্রষ্ট; বিপদ কাল বুঝিয়া বন্ধুবান্ধবেরা তাহাকে পরিত্যাগ করিলেন; প্রধান প্রধান সর্দারের বিরোধী হইয়া উঠিলেন । বাকি যৎসামান্ত লোক, তাহারা পাদশাকে ছাড়িলেন না । হুমায়ুন, পরিবারবর্গ ও এই সমস্ত বিশ্বাসী অনুচর লইয়া সিন্ধুনদের পরপারে অমরকোটে পলায়ন করিলেন। পথ ফুরায় ত পথের বিপদ ফুরায় না;–চারিদিকে মরুভূমি, কেবল বালুকারাশি ধুধু করিতেছে। একবিন্দু জল নাই, একটা বৃক্ষের ছায়া নাই, পথ দুরন্ত, পশ্চাতে শত্রুর সেনাবল। কতলোক সেই পথের মধ্যেই প্রাণ হারাইল। হুমায়ুনের সঙ্গে যাহারা অমরকোটে পৌছিল, তাহারাও মৃতকল্প । [ হুমায়ুন দেখ }। সুলতান হমিদা কঠোরগর্ভা । সিদ্ধপুরুষেরা বলিতে লাগিলেন,—“স্বয়ং ঈশ্বর আলিয়া এই নারীর গর্ভে অবতীর্ণ হইবেন । খাওজ মস্থদও নাকি আবুল ফজলের কাছে গল্প করিয়াছিলেন যে, আকবর ঈশ্বরাবতার, তাহার পিতা এ কথা যোগিদের কাছে শুনিয়াছেন। ১৫৪২ খৃঃ অক্টে, ১৫ই অক্টোবর রবিবার,-আকবর এই [ s ] অকৰর শুভদিনে শুভক্ষণে অমরকোটে ভূমিষ্ঠ হইলেন। কিন্তু পুত্রমুখ দেখিয়া হুমায়ুন স্বর্থী হইবেন কি ? শত্রুরা এখানেও উপস্থিত। আর পরিত্রাণের কোন উপায় নাই, অগত্য তিনি সস্তানকে ফেলিয়া অন্যত্র পলায়ন করিলেন। পাদশ পলাইলেন, আকবরকে রক্ষা করে কে ? কাজেই তিনি কামরানের হাতে পড়িলেন। কামরান, হুমায়ুনের সহোদর । বিষয়িলোকের সহোদর নাই, আত্মীয় স্বজন নাই,—জগৎময় কেবল শক্র । কামরান্‌ মধ্যে মধ্যে আকবরকে নষ্ট করিবার চেষ্টা পাইতেন । হুমায়ুন পলাইলেন; কিন্তু কোথায় যাইবেন ? —সং সারে আর স্থান কৈ ? তিনি ভাবিতে ভাবিতে পারস্তাভিমুখে চলিলেন। সে সময়ে তথায় শিয়া ধর্মের অত্যন্ত প্রাদুর্ভাব । পারস্তরাজ টমাস্প হুমায়ুনকে কহিলেন,— "আপনি এই ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিলে আমি যথেষ্ট সৈন্য সামন্ত দিই; আপনি পুনৰ্ব্বার স্বীয়রাজা উদ্ধার করিতে পারেন।” সম্রাট এই প্রস্তাবে সম্মত হইলেন। মানুষের দিন চিরকাল সমান যায় না; কখন বৃক্ষের তলা, ভাগ্যে কখন অট্টালিকা,—বিধাতার হাতের লিপি ইহাই দেখা যায় । হুমায়ুন পথে পথে ফিরিতেছিলেন, সৌভাগ্যলক্ষ্মী আবার তাহার পানে মুথ তুলিয়া চাছিলেন, তিনি স্বল্প কাল মধ্যে কাবুল, কান্দাহার, গজনী অধিকার করিয়া বধিলেন। সসৈন্তে কাবুল অবরোধ করিলে, কামরান্‌ অকবরকে দেখাইয়া বলিলেন—‘এই অগ্নিকুণ্ড জলিতেছে, যদি তুমি যুদ্ধ করিতে আইস,—দেখিবে এই আগুনে তোমার সস্তানকে ফেলিয়া দিব । হুমায়ুন তাহাতে ভয় পাইলেন না। তিনি বীরোচিত স্পৰ্দ্ধাসহকারে যুদ্ধে অগ্রসর হইয়া আপনার পুত্রকে উদ্ধার করিলেন । মানুষের অদৃষ্ট ফিরিলে, এক রকমে নয়,--সকল দিকেই সুবিধা হইতে থাকে। হুমায়ুনের পূৰ্ব্বতন অনুগতবর্গ দিল্লি হইতে লিখিয়া পাঠাইলেন,-“আপনার শত্রুর আর জীবিত নাই। এখন অল্প সৈন্য লইয়া দিল্লিতে আসিতে পারিলে, কষ্ট পাইতে হইবে না,-বিজয়লক্ষ্মী আহলাদ করিয়া কোলে তুলিয়া বসাইবেন। হুমায়ূন এই সংবাদ পাইয়া ভারতবর্ষাভিমুখে ছুটলেন; সঙ্গে কেবল পনরহাজার সৈন্য; সেনাপতি,—বীর বৈরাম খুঁ। অকবরের বয় ক্রম তখন তের বৎসর। বীরত্ব বীরের পুত্রকেই সাজে, অকবর তেরবৎসরের অপোগও বালক বলিয়া কাৰুলে লুকাইয়া থাকিলেন না। যখন রণভেরী বালিয়া উঠিল,