পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-চতুর্থ সংস্করণ.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূলোক S o (t রাতের বেলায় যাদের আমরা খসে-পড়া তারা বলি সেগুলো যে তারা নয় তা আজ আর কাউকে বলতে হবে না । সেই উল্কাপিণ্ডগুলো পুথিবীর টানে দিন রাত লাখো লাখে। পড়ছে পুথিবীর উপর। তার অধিকাংশই বাতাসের ঘেঁষ লেগে জ্বলে উঠে ছাই হয়ে যাচ্ছে । যেগুলো বড়ো আয়তনের, তা’র জ্বলতে জ্বলতে মাটিতে এসে পৌঁছয়, বোমার মতো যায় ফেটে, চারদিকে যা পায় দেয় ছারখার ক’রে । চাদেও ক্রমাগত এই উল্কাবৃষ্টি হচ্ছে । ওদের ঠেকিয়ে ছাই ক’রে দেবার মতো একটু হাওয়া নেই, অবাধে ওরা ঢেল৷ মারছে চাদের সর্বাঙ্গে । বেগ কম নয়, সেকেণ্ডে প্রায় ত্রিশ মাইল, সুতরাং ঘা মারে সর্বনেশে জোরে । চাদে বড়ো বড়ো গতের উৎপত্তি একদা উৎসারিত অগ্নিউৎস থেকেই । যে গলন্ত পদার্থ ও ছাই তখন বেরিয়ে এসেছিল, হাওয়া জল না থাকায় এতযুগ ধরেও তাদের কোনো বদল হোতে পারেনি। ছাই-ঢাকা আছে ব’লে সূর্যের আলো এই আবরণ ভেদ ক’রে খুব বেশি নিচে যেতে পারে না, আর নিচের উত্তাপও উপরে আসতে পারে না । চাদের যেদিকে সূর্যের আলো পড়ে তার উত্তাপ প্রায় ফুটস্ত জলের সমান, আর যেখানে আলো পড়ে না, তা এত ঠাণ্ডা হয় যে বরফের শৈত্যের চেয়ে তা প্রায় ২৫০ ফারেনহাইট ডিগ্রি নিচে থাকে। চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর ছায়। এসে যখন চাদের উপরে পড়ে তখন তার উত্তাপ কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রায় ৩৪৬ ডিগ্রি ফারেণহাইট কমে যায় ।