পাতা:বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়
২৩

কখনো এমন শিক্ষক মেলে শিক্ষাদান যাঁর স্বভাবসিদ্ধ। তিনি নিজগুণেই জ্ঞান দান করেন, নিজের অন্তর থেকে শিক্ষাকে অন্তরের সামগ্রী করেন, তাঁর অনুপ্রেরণায় ছাত্রদের মনে মননশক্তির সঞ্চার হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিশ্বক্ষেত্রে আপন বিদ্যাকে ফলবান করে কৃতী ছাত্রেরা তার সত্যতার প্রমাণ দেয়।

 যে বিশ্ববিদ্যালয় সত্য সে এই রকম শিক্ষককে আকর্ষণ করে, শিক্ষার সাহায্যে সেখানে মনোলোকে সৃষ্টিকার্য্য চলে, এই সৃষ্টিই সকল সভ্যতার মূলে। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনতরো যথার্থ শিক্ষক না হলেও চলে। হয়তো বা ভালোই চলে। কেননা এখানকার পরীক্ষাপদ্ধতিতে যে-ফলের প্রতি দৃষ্টি সে আহরণ-করা ফল, ফলন-করা ফল নয়। দৈন্যের নিষ্ঠুর তাগিদে এমনতরো শিক্ষার প্রতি দেশের লোভ আছে কিন্তু ভক্তি নেই। তাই শিক্ষক ও ছাত্রদের উদ্যমকে পরিপূর্ণমাত্রায় সতর্ক করে রাখবার প্রয়োজন হয় না। কেননা দেশের প্রত্যাশা উচ্চ নয়; বাজারদরের হিসাব করে যে পরীক্ষার মার্কা সে চায়, সত্যের নিকষে তার মূল্য অতি সামান্য। এইজন্য দুর্ম্মূল্য বিদ্যাকে সম্পূর্ণ সত্য করে তোলবার মতো শ্রদ্ধা রক্ষা করা এত কঠিন তাই শৈথিল্য তার মজ্জায় প্রবেশ করেচে।

 অভাব থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত অন্যত্র