পাতা:বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়

 এই ব্যবস্থার মধ্যে কিছু নূতনত্ব আছে, তার থেকে অনুমান করা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সম্প্রতি কোনো একটি নূতন সঙ্কল্পের সূচনা হয়েচে। হয়তো মহৎ তার গুরুত্ব। এই জন্য সুস্পষ্টরূপে তাকে উপলব্ধি করা চাই।

 বহুকাল থেকে কোনো একটি বিশেষ পরিচয়ে আমি সাধারণের দৃষ্টির সম্মুখে দিন কাটিয়েচি। আমি সাহিত্যিক, অতএব সাহিত্যিকরূপেই আমাকে এখানে আহ্বান করা হয়েচে এ কথা স্বীকার করতেই হবে। সাহিত্যিকের পদবী আমার পক্ষে নিরুদ্বেগের বিষয় নয়, বহুদিনের কঠোর অভিজ্ঞতায় সে আমি নিশ্চিত জানি। সাহিত্যিকের সমাদর রুচির উপরে নির্ভর করে, যুক্তি প্রমাণের উপর নয়। এ ভিত্তি কোথাও কাঁচা কোথাও পাকা, কোথাও কুটিল, সর্ব্বত্র এ সমান ভার সয় না। তাই বলি, কবির কীর্ত্তি কীর্ত্তি-স্তম্ভ নয়, সে কীর্ত্তি-তরণী। আবর্ত্তসঙ্কুল বহু দীর্ঘ কালস্রোতের সকল পরীক্ষা সকল সঙ্কট উত্তীর্ণ হয়েও যদি তার এগিয়ে চলা বন্ধ না হয়, অন্তত নোঙর করে থাকবার একটা ভদ্র ঘাট যদি সে পায় তবেই সাহিত্যের পাকা খাতায় কোনো একটা বর্গে তার নাম চিহ্নিত হতে পারে। ইতিমধ্যে লোকের মুখে মুখে নানা অনুকূল প্রতিকূল বাতাসের আঘাত খেতে খেতে তাকে ঢেউ কাটিয়ে চলতে হবে।