পাতা:বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়

মহাকালের বিচার-দরবারে চূড়ান্ত শুনানির লগ্ন ঘণ্টায় ঘণ্টায় ঘটে না, বৈতরণীর পরপারে তাঁর বিচার-সভা।

 বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্বানের আসন চিরপ্রসিদ্ধ। সেই পাণ্ডিত্যের গৌরবগম্ভীর পদে সহসা সাহিত্যিককে বসানো হোলো। সুতরাং এই রীতিবিপর্য্যয় অত্যন্ত বেশী করে চোখে পড়বার বিষয় হয়েচে। এ রকম বহু তীক্ষ্ণদৃষ্টিসঙ্কুল কুশাঙ্কুরিত পথে সহজে চলাফেরা করা আমার চেয়ে অনেক শক্ত মানুষের পক্ষেও দুঃসাধ্য। আমি যদি পণ্ডিত হতুম তবে নানা লোকের সম্মতি অসম্মতির দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও পথের বাধা কঠোর হোত না। কিন্তু স্বভাবতই এবং অভ্যাসবশতই আমার চলন অব্যবসায়ীর চালে; বাহির থেকে আমি এসেচি আগন্তুক, এই জন্য প্রশ্রয় প্রত্যাশা করতে আমার ভরসা হয় না।

 অথচ আমাকে নির্ব্বাচন করার মধ্যেই আমার সম্বন্ধে একটি অভয়পত্রী প্রচ্ছন্ন আছে সেই আশ্বাসের আভাস পূর্ব্বেই দিয়েচি। নিঃসন্দেহ আমি এখানে চলে এসেচি কোনো একটি ঋতু পরিবর্ত্তনের মুখে। পুরাতনের সঙ্গে আমার অসঙ্গতি থাকতে পারে, কিন্তু নূতন বিধানের নবোদ্যম হয়তো আমাকে তার আনুচর্য্যে গ্রহণ করতে অপ্রসন্ন হবে না।

 বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ম্মক্ষেত্রে প্রথম পদার্পণ কালে এই