পাতা:বেণের মেয়ে - হরপ্রসাদ শাস্ত্রী.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেণের মেয়ে “সকল ভাব পদার্থের মূলের অভাব, অভাব হইতেই ভাবের উৎপত্তি হইয়াছে। সুতরাং সমস্ত ভাবপদার্থই এক। তাতাদের রস একই প্রকার। সুতরাং সাধকের উচিত, স্বভাবতঃ নিৰ্ম্মল যে দেহ, তাঙ্গারই ধ্যান করা।” গুরুপুত্ৰ চিন্তা করিতেছেন :- তাই যদি হ’ল, দেহ যদি স্বভাবতঃই নিৰ্ম্মল, তবে আমরা যে ময়লার কথা ভাবি, পাপের কথা ভাবি, সেটা ত দেহের স্বভাবসিদ্ধ নয়। সেটা উঠুকা জিনিষ, আসিয়া জুটে । তা’কেই বলে “বিকল্প ।” সে ত আসল জিনিষ নয়। আসল জিনিষে ময়লা ধরিতে পারে না। সেই যে নিৰ্ম্মল দেহ, তাহারই ধ্যান কর, তাহারই পূজা কর। সে পূজায় উপবাসাদি কিছুই করিবে না। যাহাতে কোনরূপ কষ্ট হয়, এমন কোন কাৰ্যাই করিবে না। কাঠ-মাটা-পাথর-দেবতা, এ উঠক জিনিষ। আসল জিনিষ দেহ । তাঁহারই পূজা কর। এ পূজা, -এ ধ্যান কি প্ৰকার ? যাহাতেই কায়ের ও মনের তৃপ্তি হয়, তাহাই করিতে হইবে। তাহাতে বন্ধমুক্তির কথাই কি ? “যেন যেন হি বাধ্যন্তে জন্তবে রৌদ্রকন্মণ । সোপায়েন তু তেনৈব মুচ্যন্তে ভববন্ধনাৎ ॥” “যে সকল ভয়ঙ্কর কাৰ্য্যের দ্বারা লোকে বদ্ধ হয়, কৌশলের সহিত সেই সকল কাৰ্য্য করিলে তাহাতেই ভববন্ধন হইতে মুক্ত হয়।” সে কৌশল কি ?-গুরুর উপদেশ । শুরুর উপদেশ হইলে— “রাগেণ বাধ্যতে লোকে রাগেণৈব বিমুচ্যতে। বিপরীতভাবনা হোষা ন জ্ঞাতা বুদ্ধতীর্থিকৈঃ ৷” “যে আসক্তিতে লোকে বদ্ধ হয়, সেই আসক্তিতেই লোকে মুক্ত হয় ; -এই যে বিপরীত ভাবনা, এই যে রাগের বিপরীত শক্তি, ইহা বুদ্ধকৃতীৰ্থিকেরাও জানিতেন না ।” (8