পাতা:বোম্বাই চিত্র - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সিংহলে ভ্ৰমণ বৃত্তান্ত । G \ মুখে শুনিয়াছি। আমরা উষাকাল আর প্রদোষকাল এখানে যেমন ভোগ করিতেছি, এমন কখনই করি নাই। আমাদের বাসস্থানের নূতনত্ব গিয়াছে, এখানকার দ্রব্যের আস্বাদও ভাল লাগে না, কিন্তু সমুদ্র ও পুরাতন হয় না—সূৰ্য্যের উদয়াস্তেরও প্রত্যহই নূতন শোভা—বায়ু খাইয়া খাইয়াও স্বাদ মিটে না । আদ্যকার সায়ংকাল যে কি হইয়াছে বলিতে পারি না ! সূৰ্য্য অল্পে অল্পে সমুদ্রের মুখের মধ্যে প্রবেশ করিতেছে যেন কোন ভয়ানক জন্তু এমন এক সুন্দর কুমারকে গ্রাস করিতেছে! এমন ক্লেশকর দৃশ্য দেখিয়া জগৎ স্নানমূৰ্ত্তি ধারণ করিল এবং কিছু পরে যেন বিষাদঘনে এককালে আবৃত হইয়া গেল ! সূৰ্য্য অস্ত হইল বলিয়া যে একেবারে চলিয়া গেল তােহা নহে, আবার সে নূতন মাহাত্ম্য ধারণ করিয়া উদয় হইবে। মনুষ্যের মৃত্যু ও এই প্রকার, আবার সে নব জীবন প্রাপ্ত হইবে। সূৰ্য্যাস্ত পরে আকাশ কতই বিচিত্র বর্ণে অনুরঞ্জিত হইল! সিন্দরবর্ণ, স্বর্ণবৰ্ণ, নীলবৰ্ণ, পাটলিবর্ণ মেঘাবলী স্থানে স্থানে विकीन হইয়াছে ! এমন শোভা কোথায় দেখা যায় ? যদি কলিকাতার দুৰ্গন্ধময় গলি হইতে এক ব্যক্তিকে একেবারে এখানে আনা যায়, তবে যে তাহার মনে কি হয়, তাহা বলা যায় না। কি দেখিতেছে, কোথায় আসিয়াছে—সে এককালে বোধ হয় হতবুদ্ধি হইয়া যায়। এই প্রকার স্থান চিত্তকে প্ৰফুল্ল করে—মনকে উন্নত করে আত্মাকে আপন মহত্ত্বে পূর্ণ করে।