পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বিতীয় উপদেশ।


ঈশ্বর সৃষ্টিস্থিতি প্রলয়কর্ত্তা।

 পরমেশ্বরই সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়ের একমাত্র কারণ। সেই পূর্ণ পুরুষের ইচ্ছামাত্র সমুদায় জগৎ অসদবস্থা হইতে উদ্ভাবিত হইয়া সৎভাব প্রাপ্ত হইয়াছে, তাঁহার মহতী ইচ্ছার অধীনে ইহাৱা অদ্যাপি স্থিতি করিতেছে এবং সেই ইচ্ছার বিরাম হইলে সমুদায় পদার্থ স্বীয় স্বীয় শক্তির সহিত তাঁহার শক্তিতে লয় প্রাপ্ত হইয়া অন্তে তাঁহাতেই বিশ্রাম করিবে। পরমেশ্বর সর্বশক্তিমান্ এবং যিনি সর্ব্বশক্তিমান্, তিনিই সৃষ্টিস্থিতি প্রলয় কর্ত্তা। সৃজন শক্তি, পালন শক্তি এবং সংহার শক্তি, এই তিন অলৌকিক শক্তি কেবল তাঁহারই। যিনি সৃষ্টি করিতে পারেন; তিনিই সংহার করিতে পারেন, যে নির্ম্মাণ করিতে পারে, সে ভঙ্গ করিতেও পারে। এক রেণু বালুকা আমরা সৃষ্টি করিতে পারি না, এক রেণু বালুকা ধ্বংস করিতেও পারি না। আমরা যেমন কতকগুলি উপকরণ একত্র করিয়া এবং সেই সকলকে উপযুক্ত মত সংযোগ করিয়া কোন যন্ত্র নির্ম্মাণ করি, জগদীশ্বর সে রূপে বিশ্ব নির্ম্মাণ করেন নাই। তাঁহার ইচ্ছাতেই এই সমুদয় উৎপন্ন হইয়াছে। তিনি স্বীয় মহীয়সী শক্তির প্রভাবে এই বিশ্বকে অসৎ অবস্থা হইতে সদ্ভাবে আনিয়াছেন। তাঁহার শক্তির কোন সহকারী কারণ নাই।