পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঈশ্বর সৃষ্টিস্থিতি প্রলয়কর্ত্তা।
১১

 অসৎ হইতে সৎ, আপনাপনিই জন্মিতে পারে না। “কথমসতঃ সজ্জায়েত।” অনন্ত-শক্তিসম্পন্ন অনাদি পুরুষের ইচ্ছাই এই জগতের অস্তিত্বের মূলীভূত কারণ। আবার যাঁহার ইচ্ছাতে সৃষ্টি হইয়াছে, তাঁহার সেই ইচ্ছার বিরাম ব্যতীত সৃষ্টির কণামাত্রও ধ্বংস হইতে পারে না। ঈশ্বরের শক্তি ব্যক্ত হওয়ার নাম সৃষ্টি—ঈশ্বরের শক্তি ঈশ্বরেতেই প্রত্যাবৃত্ত হওয়ার নাম প্রলয়। যে অনাদি পুরুষের শক্তি হইতে এই সকল বস্তু উৎপন্ন হইয়া স্বীয় স্বীয় শক্তি লাভ করিয়াছে, তিনি যদি সেই মহীয়সী শক্তি অপনয়ন করিবার ইচ্ছা করেন, তবে স্বীয় স্বীয় শক্তির সহিত সমুদয় সৃষ্ট বস্তু তাঁহার শক্তিতে লয় পাইয়া পুনর্ব্বার তাঁহাতেই গমন করিবে। সৃষ্টি হইবার পরে ঈশ্বরের যে শক্তি যাবতীয় সৃষ্টি প্রক্রিয়াতে আবির্ভূত হইয়াছে, সৃষ্টির পূর্ব্বে বস্তুতও সেই শক্তি ঈশ্বরেতে অব্যক্ত রূপে অবস্থিত ছিল এবং তিনি যদি ইচ্ছা করেন, তবে সেই শক্তির আবির্ভাব নিবৃত্তি প্রাপ্ত হইয়া তাঁহার শক্তি তাঁহাতেই পূর্ব্বের মত অব্যক্ত রূপে স্থিতি করিবে।

 স্থিতি কালে সমুদায় লোক তাঁহারই মহতী ইচ্ছার অধীনে স্থিতি করিতেছে। চেতনাচেতন সমুদয় পদার্থই তাঁহার নিয়ম অবলম্বন করিয়া আছে, কেহই তাঁহার নিয়ম অতিক্রম করিতে পারে না। পরমেশ্বর জ্ঞানেতে অভ্রান্ত— তিনি শক্তিতে অনন্ত। তিনি প্রথমে যে সকল ভৌতিক শারীরিক ও মানসিক নিয়ম সংস্থাপন করিয়াছেন, তাহা অখণ্ডনীয়, তাহা অপরিবর্ত্তনীয়। জীব মাত্রেই তাঁহার