পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
দ্বিতীয় উপদেশ।

মঙ্গলময় নিয়মের অধীন—মনুষ্যও তাঁহার আশ্রয়ে থাকিয়া জীবন যাত্রা নির্ব্বাহ করিতেছে। তিনি অচেতন জড় পদার্থকে যে প্রকার নিয়মে নিয়মিত করিয়াছেন, প্রাণ বিশিষ্ট উদ্ভিদ্ বর্গকে তদ্ভিন্ন আর তার নিয়মে বদ্ধ করিয়াছেন। তিনি প্রাণ বিশিষ্ট বৃক্ষ বল্লবাদির মধ্যে যে সকল নিয়ম স্থাপন করিয়াছেন, সচেতন জীব জন্তুদিগকে তদতিরিক্ত আরো অনেক প্রকার নিয়মের অধীন করিয়াছেন। আবার তিনি পশু পক্ষী কীট পতঙ্গের মধ্যে যে সমুদয় নিয়ম ব্যবস্থিত করিয়াছেন, মনুষ্যের জন্য শুদ্ধ সে রূপ করিয়া ক্ষান্ত হন নাই। জগদীশ্বর মনুষ্যকে স্বীয় প্রবৃত্তির উপর কর্ত্ত‌ৃত্ব, দিয়াছেন, তাহার একান্ত অধীন করিয়া দেন। নাই। এই প্রকার আধিপত্য ও কর্ত্তৃত্ব ভার পাইয়াছে বলিয়াই মনুষ্য নামের এত গৌরব হইয়াছে। চন্দ্র সূর্য্য মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অতিক্রম করিয়া এক পদও প্রসারণ করিতে পারে না; পশু পক্ষী স্ব স্ব প্রবৃত্তির প্রতিকূলে আপন ইচ্ছাতে চলিতে পারে না; কিন্তু মনুষ্য আপনার প্রকৃতির উপরে কর্ত্তৃত্ব করিতে পারে। আপনার উৎকর্ষ এবং অপকর্ষ সাধন মনুষ্যের যত্নাধীন। মনুষ্য আপনার শুভাশুভ বিষয়ে আপনিই দায়ী। মনুষ্যই ধর্ম্ম রূপ মন্ত্রী পাইয়াছেন। তিনি ন্যায় অন্যায়, কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্য বিবেচনা ফরিয়া কার্য্য করিতে পারেন। মনুষ্যেরই এমত শক্তি আছে, যে তিনি স্বীয় প্রবৃত্তির কুটিল অভিসন্ধি সুদূর পরাহত করিতে পারেন। তিনি সহস্র প্রকার বিঘ্ন অতিক্রম করিয়া ঈশ্বরের পথে পদ প্রসারণ করিতে পারেন। মানুষ্যের