পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
অষ্টম উপদেশ।

দের সমুদায় কামনা চরিতার্থ হইত, তবে ধর্ম্মের কোন মূল্য, কোন বলই থাকিত না। ধর্ম্মের এ প্রকার উদার ভাব যে আমরা যদি সুখ উদ্দেশ করিয়া ধর্ম্ম সাধন করি, তবে তাহার পবিত্রতার হানি হয়। ত্যাগই ধর্ম্মের প্রাণ-স্বরূপ: কিন্তু আমরা যদি ভাবি লাভের উদ্দেশে ত্যাগ আপাততঃ স্বীকার করি, তবে ধর্ম্মতঃ সে ত্যাগই নহে। ধর্ম্মের জন্য সম্যক ত্যাগ স্বীকার কৱিতে হইবে। ধর্ম্মকে ধর্মের জন্যই আলিঙ্গন করিতে হইবে। আমরা যদি ভাবি সুখের প্রত্যশায় বর্ত্তমান সুখ পরিত্যাগ করি, তবে তাহা ধর্ম্ম-সাধন হইল না, স্বার্থ সাধন মাত্র। ধর্ম্মের দেশ বলিয়াই কার্য্য করিতে হইবে; তাহাতে অন্য কোন গুপ্ত অভিসন্ধি থাকিলে হইবে না। এ স্থলে বিষয়-সুখের সঙ্গে ধর্ম্মের সঙ্গে কেমন বিরোধ; আমাদের সম্পর্ণ লোভ-শূন্য হইয়া ধর্ম্মানুষ্ঠান করিতে হইবে। তবে ঈশ্বর যদি তাহার পুরস্কার দেন; তিনি যদি আমাদের কষ্টের শতগুণ সুখ আমাদের জন্য সঞ্চিত করিয়া রাখেন; তবে ইহাতে তাঁহার কৃপা ভিন্ন আর কিছুই নাই, ইহাতে আমাদের নিঃস্বার্থ ভাবের কোন হানি হইল না।

 বিষয়-সুখের সঙ্গে ধর্ম্মের বিরোধ থাকাতেই ধর্ম্মের যথার্থ মাহাত্ম্য প্রকাশ পাইতেছে। আমাদের যা ইচ্ছা, তাহাই যদি ধর্ম্ম হইত; আমাদের স্বেচ্ছাচার তার কর্ত্তব্যে যদি কোন প্রভেদ না থাকিত; তবে ধর্ম্ম-কার্য্যের মূল্য কি থাকিত? আমরা, আপনা হইতে ধর্ম্ম পথে যাই ঈশ্বরের ইচ্ছা এই; এবং এই হেতু তিনি আমাদিগকে স্বাধীন করিয়া