পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বর্গ ও নরক।
৬৩

দিয়াছেন। আমাদের সম্মুখে সৎপথ অসৎ পথ দুইই রহিয়াছে এবং এই দুয়ের মধ্যে যাহা ইচ্ছা আমরা বাছিয়া লইতে পারি, এই কর্ত্তৃত্ব ভারও রহিয়াছে। যখন ইচ্ছা পূর্ব্বক সৎকে অবলম্বন করাতেই ধর্ম্ম, তখন যদি ধর্ম্মের বিরোধী ইচ্ছা আমাদের কিছুই না থাকিত, তাহা হইলে আমাদের ধর্ম্মের উপার্জন কি হইত? সংসারের কোন প্রলোভনই যদি আমাদিগকে ধর্ম্ম-পথ হইতে আকর্ষণ করিবার জন্য আমাদের সম্মুখে না আসিত, তবে ধর্ম্ম রক্ষার গৌরব কি থাকিত? যাই ধর্ম্মের বিরোধী বিষয়সকল আমাদিগকে আকর্ষণ করিতেছে, খাই আমরা বল পুর্ব্বক সেই সকল বিষয়ের প্রতিশ্রোতে যাইতেছি; তাহাতেই আমরা ধর্ম্মের গুরুত্ব উপলব্ধি করিতেছি। ঈশ্বর যদি কেবল আমাদিগকে সুখী করিবার ইচ্ছা করিতেন, তবে ধর্ম্ম না দিয়াও সুখী করিতে পারিতেন। কিন্তু যখন তাঁহার শুভ অভিপ্রায় এই যে আমরা ধর্ম্ম-বল উপার্জ্জন করিয়া তাঁহার নিকটবর্ত্তী হইতে থাকি, তখন আমাদের লক্ষ্য কি বিষয়-সুখ হওয়া উচিত? না ধর্ম্মের জন্য বিষয়সুখের হানিকে হানি বোধ করা উচিত?

 আমরা এখানে দুই প্রকার অবস্থা দেখিতে পাই। অনেক স্থলে ধর্ম্মের সঙ্গে আমাদের বিরোধ থাকে, অনেক হলে নির্ব্বিরোধ। এক আমাদের নির্দ্দোষাবস্থা; অন্য আমাদের উন্নতি কিম্বা দুর্গতির অবস্থা। আমাদের প্রবৃত্তির সঙ্গে অনেক স্থলে ধর্ম্মের ঐক্য দেখা যায়। শরীর রক্ষা তামাদের পরম ধর্ম্ম; কিন্তু আমরা প্রবৃত্তি বশতও