পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বর্গ ও নরক।
৬৭

পণ্ডিতভিমানী ব্যক্তিরা যাহা বলুন না কেন, এ সকল সুখ কখনই হেয় নহে! জগদীশ্বর আমাদের জন্য এ প্রকার সুখ অপর্যাপ্ত রূপে বিস্তার করিয়া রাখিয়াছেন। আমাদের চক্ষু কর্ণ পবিত্র সুখের দুই বিস্তীর্ণ দ্বার। কিন্তু এই প্রকার ইন্দ্রিয়-সুখই আমাদের সর্বস্ব নহে। ইহাতেই আমাদের সমুদয় প্রকৃতি চরিতার্থ হয় না। আমরা ইহা অপেক্ষাও আরো অধিক কিছু চাই। ইন্দ্রিয়-লোলুপ ব্যক্তি এ প্রকার সুখে সম্যক্ পরিতৃপ্ত থাকিতে পারে না। যৌবন কাল অতিক্রম করিয়া ইহা বিলক্ষণ অনুভব করা যায়। আমরা যৌবন কালে যত অপর্য্যাপ্ত রূপে সুখভোগ করি, পরে তত শীঘ্র তাহাতে বিরক্তি জমে। যাহারা সে সময়ে পরিমিত রূপে সুখ ভোগ করে, পরে আর তাহাতে তেমন স্পৃহা থাকে না। আমাদের জীবনের এমন এক সময় উপস্থিত হয়, যখন আমাদের সাংসারিক সমুদয় ভাব শীতল হুইয়া যায় এবং সংসারকেই যাহারা সার্ব্বস্ব জানিয়া সেবা করিয়া আসিয়াছে, তাহারাও বুঝিতে পারে যে সেই সংসারও তাহাদের শূন্য হৃদয়কে পূর্ণ করিতে পারে নাই।

 অতএব স্বর্গকে এই প্রকার বিষয়-সুখের আলয় বলিয়া বর্ণন করা কি মূঢ়ত্বের কর্ম্ম! বিষয়-সুখে আমাদের আত্মা তৃপ্ত হয় না, এই আমাদের পরম মঙ্গল। তবে সেই সুখই কি আমাদের জীবনের শেষ লক্ষ্য, সমুদায় কর্ম্মের শেষ ফল হইবে?

 পুনঃ পুনঃ বলা হইয়াছে যে আমাদের নিঃস্বার্থ ভাবে লোভ-শূন্য হইয়া ধর্ম্মের তানুষ্ঠান করিতে হইবে। আমরা