পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুক্তি।
৮৫

হইতে সর্ব্বাতীত পরমেশ্বরে গমন করে এবং সেই অনন্তের নামাক্ষর সর্ব্বত্র পাঠ করিয়া আপনাকে উন্নত করে।

 সেই আত্মাই মুক্ত, যে সংসারের অনুরোধ অপেক্ষা ঈশ্বরের অনুরোধ গুরুতর জ্ঞান করে; যে দেশাচারের নিকটেই অবনত না হয়, পৈতৃক ধর্ম্ম গ্রহণ করিয়াই তুষ্ট না থাকে; যেখান হইতেই হউক সত্যের আলোক পাইলেই আদর পূর্ব্বক গ্রহণ করে এবং মনুষ্যের উপদেশ অন্তরের ধর্ম্মোপদেশকে অতিক্রম করিতে না দেয়।

 সেই আত্মাই মুক্ত, যাহার প্রীতি সঙ্কীর্ণ নহে; যে এক দেশে বা এক সম্প্রদায়ের মধ্যে বদ্ধ নহে; যে সকলের প্রতি প্রসন্ন ভাবে দৃষ্টি করে; যে আলস্য অহঙ্কার স্বার্থপরতা অতিক্রম করিয়া হৃদয়-গ্রন্থি-সকল ছেদন করে এবং ঈশ্বরের জন্য আপনার সর্ব্বস্ব বলিদান দিতেও প্রস্তুত থাকে।

 সেই আত্মাই মুক্ত, যে আত্মা বাহিরের অবস্থাতেই সংরচিত হয় না; ঘটনার স্রোতেই নীয়মান হয় না; যে প্রবৃত্তির অধীনতাতেই কার্য্য করে না; কিন্তু আপনার জীবনের সঙ্কল্প স্থির রাখিয়া সকল ঘটনা, সকল অবস্থাকেই, আপনার উন্নতির অনুকূল করে।

 সেই আত্মাই মুক্ত, যে ধর্ম্ম-বলে সবল হইয়া পূর্ণ মঙ্গল স্বরূপ ঈশ্বরে আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করিয়া সকল ভয় পরিত্যাগ করে; পাপকে যাহার সকল বিপদের মধ্যে ভয়ানক বিপদ্ মনে হয়; কোন ভর্ৎসনা, কোন নির্যাতনা, যাহাকে ধর্ম্ম-পথ হইতে ভ্রষ্ট করিতে সমর্থ হয় না; যে এই অস্থায়ী স্থূল বাহ্য বিষয় হইতে নিবৃত্ত দু হইয়া বিষয়া-