পাতা:ব্রাহ্মধর্ম্মের মত ও বিশ্বাস - দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মুক্তি।
৮৭

যে অবধি আমাদের জ্ঞান, প্রীতি ও কর্ত্তৃত্ব পরিষ্ফুটিত হইতে আরম্ভ হইয়াছে, সেই অবধি আমরা মুক্তি লাভের অধিকারী হইয়াছি এবং তাহারা যত বিবৃত হইবে, মুক্তির অবস্থা ততই গ্রহণ করতে থাকিব। আমাদের জ্ঞান যত ঈশ্বরের জ্ঞানের অনুগামী হইবে;―প্রীতি যত তাঁহার প্রীতিতে মিলিত হইবে; ইচ্ছা যত তাঁহার ইচ্ছার অনুযায়িনী হইবে; ততই আমাদের মুক্ত ভাব। আমাদের জ্ঞান ও ভাব ও ইচ্ছা, সেই সত্য সুন্দর মঙ্গল-পূর্ণ পুরুষের সহিত যত ঐক্য হইতে থাকিবে, ততই তাহারা মুক্তির অবস্থা প্রাপ্ত হইবে। আমাদের ইচ্ছা যখন তাঁহার ইচ্ছার সহিত মিলিত হইয়া আমাদের অন্তরে ভূলোক ও দ্যুলোকের সামঞ্জস্য শৃঙ্খলা বিরাজ করিতে থাকিবে, তখনই আমাদের মোক্ষাবস্থা। যখন সত্য-জ্যোতিতে জ্ঞান উজ্জ্বল হইবে, প্রীতির শিখায় হৃদয় উদ্দীপ্ত হইবে, বল পবিত্রতা ও উন্নত আশা আমাদের সমুদয় প্রকৃতিকে উজ্জ্বলিত করিবে, তখনই মুক্তি। সেই অমৃতের সঙ্গে যোগ হইলেই আমরা অমৃত সূর্য্য কিরণে বাস করতে থাকি।

 এই মুক্তি লাভ করা আমারদের অনন্তকাল সাধ্য। ঈশ্বরের পূর্ণ জ্ঞান, পূর্ণ ইচ্ছার সহিত মিলিত হইতে আমাদের অনন্ত জীবন গত হইবে। এখানে আমাদের মৃত্যু পর্য্যন্ত একটী কালের নির্দ্দেশ আছে। এখানে আমাদের এক পাঠ সাঙ্গ হইয়া গেল। কিন্তু পৃথিবীই আমাদের শিক্ষার শেষ স্থল নহে। এখন এক কাল, এজীবনের পর অবধি নিত্য কাল আরম্ভ হইবে। এখানে কেবল সংসারের সঙ্গে