পাতা:ভারতপথিক রামমোহন রায়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তখন ধর্মবোধের সঙ্গে যে অবাধ ঐক্যতত্ত্ব একাত্ম তা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

 ইতিহাসে দেখা গেছে একদা য়িহুদিরা তাঁদের ঈশ্বরকে তাঁদের জাতিগত অধিকারের মধ্যে সংকীর্ণ করে রেখেছিলেন; তাঁদের ধর্ম তাঁদের দেবতার প্রসাদকে নিজেদের ইতিহাসের মধ্যে একান্ত পুঞ্জিত করে রাখবার ভাণ্ডারঘরের মতো ছিল। সেই দেবতার নামে ভিন্ন সম্প্রদায়ের সর্বনাশ করাকে নিজদেবতার পূজার অঙ্গ বলেই তাঁরা মনে করেছিলেন। তাঁদের দেবতাকে হিংস্র বিদ্বেষপরায়ণ রক্তপিপাসু -রূপে ধ্যান করাই তাঁদের বিশেষ গৌরবের বিষয় ছিল। সেদিন তাঁদের ধর্মোৎসব তাঁদেরই মন্দিরের প্রাঙ্গণে ছিল সংকুচিত। সেখানে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই শুধু যে ছিল অনাহুত তা নয়, তারা শত্রু বলেই গণ্য হত।

 যিশু এলেন ধর্মকে মুক্তি দিতে। ঈশ্বরকে তিনি সর্বমানবের পিতা বলে ঘোষণা করলেন— ধর্মে সকল মানুষের সমান অধিকার, ঈশ্বরে মানুষের পরম ঐক্য, এই সাধনমন্ত্র যখন তিনি মানুষকে দান করলেন তখন এই সাধনার সম্পদ সকল মানুষের উৎসবের যোগ্য হল।

 যিশুর শিষ্যেরা এই মন্ত্র সকলেই সত্যভাবে গ্রহণ করেছে এমন কথা বলতে পারিনে। মুখে যাই বলুক, পাশ্চাত্য জাতির ধর্মবুদ্ধি মোটের উপর ওল্ড্ টেস্টামেণ্টের ভাবেই সংঘটিত এইজন্য যুদ্ধবিগ্রহের সময় তারা ঈশ্বরকে নিজেদের দলভুক্ত

৫৬