পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

কি করিয়া আঁকিতে হয় তাহাও বর্ণিত আছে। সেই সঙ্গে ইহাও উল্লিখিত আছে যে কেবলমাত্র চিত্রশাস্ত্রানুযায়ী ছবি আঁকিলে চলিবে না, চিত্রী তাঁহার অভিজ্ঞতাদ্বারা সমস্ত জিনিস নিজে দেখিয়া সেই অনুসারে ছবি আঁকিবেন। নাট্যশাস্ত্রে যে সব রসের কথা উল্লেখ আছে তাহাদের চিত্রের মধ্য দিয়া ফুটাইয়া তোলা চিত্রীর একটি প্রধান লক্ষ্য বলিয়া পরিগণিত হইত। যে সমস্ত চিত্রে অবয়বসংস্থান বা posture সুন্দর করিয়া দেখানো হয় না বা রসাভিব্যঞ্জন হয় না, কিংবা দৃষ্টির মধ্য দিয়া প্রাণ প্রকাশ পায় না সেই সমস্ত চিত্র কুৎসিত বলিয়া পরিগণিত হয়। আর যে সমস্ত চিত্র দেখিলে মনে হয় যেন চিত্রের মানুষটি চিত্রফলক হইতে বাহির হইয়া আসিতেছে, লাবণ্যের বিলাসে হাসিয়া উঠিতেছে কিংবা ভীত হইতেছে, নিঃশ্বাস প্রশ্বাস ফেলিতেছে তাহাই উত্তম চিত্র—“লসতীব চ ভূলম্বো বিভ্যতীব তথা নৃপঃ। হসতীব চ মাধুর্য্যং সজীব ইব দৃশ্যতে॥ সশ্বাস ইব যচ্চিত্রং তচ্চিত্রং শুভক্ষণম্।”...

চিত্রশাস্ত্র নৃত্যশাস্ত্রের একটি অঙ্গ বলিয়া পরিগণিত হইত, এই জন্য চিত্রসূত্রে লিখিত আছে যে চিত্রশাস্ত্রে যাহা অনুক্ত হইল তাহা নৃত্যশাস্ত্র হইতে বুঝিতে হইবে। নৃত্যশাস্ত্রে দেখা যায় যে বহুপ্রকারের করণ এবং অঙ্গহারাদির নির্দ্দেশ আছে। অঙ্গহার বলিতে বুঝা যায়—“অঙ্গানাং দেশান্তরে সমুচিতে প্রাপণ-প্রকারোহঙ্গহারঃ”—যে যে উপায়ে শরীরের অবয়বকে বা সমগ্র শরীরকে যথোপযুক্তস্থানে চালিত করিতে পারা