পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

অঙ্গীভূত বলিয়া বলা হইয়াছে বলিয়া এবং চিত্রশাস্ত্রের নির্দ্দেশ অনুসারেও আমাদিগকে এই কথা বলিতে বাধ্য হইতে হয় যে আমাদের চিত্রশাস্ত্রের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জীবনধর্ম্মকে প্রস্ফুট করিয়া দেখানো।

 ভারতীয় অঙ্কনপদ্ধতির প্রধান লক্ষ্যই ছিল জীবনকে ফুটাইয়া তোলা। এইজন্য আমাদের দেশের মূর্ত্তিগুলির মধ্যে যে অবয়ব সামঞ্জস্যের প্রযত্ন দেখা যাইত তাহাতে অবয়বের অঙ্গীভূত যে আকাশের (space) কল্পনা প্রকাশ পইয়াছে তাহা যেন পরস্পরের গতির ছন্দে লীলায়িত হইয়া মিলিত হইয়াছে। অনেকগুলি স্থান, অঙ্গহার ও করণ লইয়া একটি নৃত্য, এই গতিশীল নৃত্যের মধ্য হইতে হঠাৎ যদি একটি বিশিষ্ট স্থানকে (posture) ছিন্ন করিয়া লওয়া যায় এবং তাহাকে যদি মূর্ত্তি দেওয়া যায় তবেই যেন ভারতীয় চিত্রের এই রীতিটি প্রত্যক্ষ করা যায়। ইহার অর্থ ইহা নহে যে ভারতীয় সমস্ত চিত্র বা মূর্ত্তিই গতিশীল। ইহার অর্থ এই যে প্রধানতঃ অধিকাংশ ভারতীয় মূর্ত্তি ও চিত্রের মধ্যে যে স্থিতিটি দেখানো হইয়াছে, গতির মধ্য হইতে যেন তাহা ছাঁকিয়া পৃথক্ করা হইয়াছে এবং সেইজন্য নৃত্যগতির মধ্যে শরীরের যে লীলায়িত ভাব থাকে সেই ভাবটিকেই চিত্রে ও ভাস্কর্য্যে প্রকাশ করিবার চেষ্টা করা হইয়াছে। লীলায়িত ভাব দেখাইতে গেলে পেশী, কণ্ডরা ও স্নায়ু, অস্থি প্রভৃতিকে প্রাধান্য দিয়া দেখানো চলে না। গতি সম্বন্ধে বলিতে গিয়া Leonardo da Vinci বলিতেছেন—