পাতা:মরণের ডঙ্কাবাজে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মরণের ডঙ্কা বাজে

দু'জনের পক্ষেই লাভজনক কোনো প্রস্তাব উত্থাপিত হবে। আসতে ইতস্ততঃ করবেন না। লেখার নীচে কারো নাম সই নেই।

 বিমলও কাগজখানা পড়লে। ব্যাপার কি? এ ওর মুখের দিকে চেয়ে রইলো। কিছুক্ষণ দুজনেই নীরব।

 সুরেশ্বর প্রথমে কথা বল্লে। বল্লে― কেউ তামাসা করচে বলে মনে হচ্ছে, কি বলো? কিন্তু তাই বা করবে কে, আমাদের চেনেই বা কে? বিমল চিন্তিত মুখে বল্লে― কিছু বুঝতে পারচি নে। কোনো খারাপ উদ্দেশ্য আছে বলে মনে হয় না কি?

 ― কি খারাপ উদ্দেশ্য! আমরা যে খুব বড় লোক নই, তার প্রমাণ ভিক্টোরিয়া হোটেল বা এম্পায়ার হোটেলে না উঠে এখানে উঠেচি। টাকাকড়ি সঙ্গে নিয়েও যাচ্ছিনে। সুতরাং কি করতে পারে আমাদের?

 সে রাত্রের মত দু'জনে ঘুমিয়ে পড়ল। সকালে উঠে বিমল বল্লে― চল, যাওয়াই যাবে। এত ভয় কিসের? বোটানিক্যাল গাডেন তো আর নির্জ্জন মরুভূমি নয়, সেখানে কত লোক বেড়ায় নিশ্চয়ই। দু’জনকে খুন করে দিনের আলোয় টাকাকড়ি নিয়ে পালিয়ে যাবে, এত ভরসা কারুর হবে না।

 দুপুরের পরে হোটেল থেকে বেরিয়ে কুয়ালা জোহর ষ্ট্রীটের মোড় থেকে একখানা রিক্সা ভাড়া করলে। ম্যাডিসন কোম্পানীর সোডাওয়াটারের দোকানের সামনে একজন চীনা ভদ্রলোক ওদের রিক্সা থামিয়ে চীনে রিকসাওয়ালাকে কি জিগ্যেস করলে। তারপর উত্তর পেয়ে লোকটি চলে গেল। বিমল রিকসাওয়ালাকে ইংরেজিতে জিগ্যোস করলে― কি বল্লে তোমাকে হে?

 রিক্সাওয়ালা বল্লে― জিগ্যেস করলে সওয়ারী কোথায় নিয়ে যাচ্চ?