পাতা:মরণের ডঙ্কাবাজে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মরণের ডঙ্কা বাজে

নয়— সে নাকি মান্চুকুও রণক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা থেকে জানে বােমার গর্ত্তই সর্ব্বাপেক্ষা নিরাপদ স্থান।

 আর একজন বল্পে— কেন, যদি মেসিন গান চালায়?

 আগের লােকটা বল্লে— পুঃ!—মেসিন গান! এই অন্ধকারে!

 এমন সময় হঠাৎ দেখা গেল সেই ছ’খানা প্লেন্ ঠিক ওদের গর্ত্তের ওপর এসে চক্রাকারে উড়ছে এবং ক্রমে নীচু হয়ে নামছে যেন।

 কে একজন বল্লে— আমাদের টের পেলে নাকি!

 মুখের কথা সবারই ওষ্ঠাগ্রে যেন জমাট বেঁধে গিয়েছে— বুকের রক্ত পর্য্যন্ত জমাট বেঁধে গেল সকলের। কেবল আগে পুলিশম্যানটা বলতে লাগলাে— কোনাে ভয় নেই— ওরা, মেশিনগান ছুড়ে কিছু করতে পারবে না— কাওয়াসাকি বম্বারের মেসিনগানের তরিবৎ সুবিধের নয়— হােত যদি জার্ম্মাণ হেঙ্কেল্ ফিফটিওয়ান, কি স্কুলজ্- ব্যাঙ্ক একশো এগারো—

 সবাই চাপা গলায় বিষম রাগের সঙ্গে এক সঙ্গে বলে উঠলো— আঃ— চুপ! সঙ্গে সঙ্গে প্লেনগুলাে অনেক খানি নেমে এল এবং অকস্মাৎ এক তীব্র সার্চ্চলাইটের আলােয় ওদের বােমার গর্ত্ত এবং চারিপাশের আরও অনেক দূর পর্যন্ত আলােকিত হয়ে উঠলো— উঠবার সঙ্গে সঙ্গে পটকা বাজির মত মেশিনগান ছোঁড়ার শব্দে ওদের কানে তালা ধরবার উপক্রম হােলাে।

 একজন ফিস ফিস করে বল্লে— বাঁচতে চাও তো সবাই মড়ার মত পড়ে থাকো— ভান করাে যে সবাই মরে গিয়েছো—

 আগের সেই মার্কিন পুলিশম্যানটা যুক্তিতর্কে অদম্য। সে বলে উঠলো— কিছু হবে না। দেখো— হাঁ হােত যদি হেঙ্কেল্ ফিফটিওয়ান— কিংবা

 — আবার!