পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भविक यंहांदगी যশোদা বলে, “কি বলেছিলাম ?” “সেই যে, যে জন্য গয়না বেচা চলে ?” কিছুক্ষণ যশোদা বুঝিতেই পারে না, অবাক হইয়া সুব্রতার মুখের দিকে চাহিয়া থাকে । তারপর খেয়াল হয় । ‘ওমা, সত্যি ? বলিয়া সুব্রতাকে সে বুকে টানিয়া নেয়। কি হয় তখন যশোদার, প্রথম সন্তান সম্ভাবনায় উদভ্ৰান্ত পরের একটা মেয়েকে সজোরে বুকে চাপিয়া ধরিয়া ? তীব্ৰ বেদনার সম্ভাবনায় বিরাট দেহের প্ৰত্যেকটি অণু ভয়াৰ্ত্ত ঔৎসুক্যে সজাগ হয়ে ওঠে, চাদকে প্রসব করার সময় যেমন হইয়াছিল। আলিঙ্গনের চাপে দিম আটকাইয়া সুব্রতার প্রাণ বাহির হইয়া যাওয়ার উপক্রম হয়। জোর তো সোজা নয়। যশোদার দু’টি বাহুতে । সুব্রতার অস্ফুট আৰ্ত্তনাদে সচেতন হইয়া সে তাকে ছাড়িয়া দেয়। ধাপ করিয়া মেঝেতে বসিয়া জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে ক্ষীণস্বরে সুব্ৰতা বলে, “আরেকটু হলেই শেষ করে দিয়েছিলে দিদি।” রাত্রে ধনঞ্জয়কে খাইতে দিয়া সামনে বসিয়া থাকিতে থাকিতে যশোদার মনে হয়, আরেকজন মানুষকে খবরটা শুনাইতে না পারিলে বুকটা তার ফাটিয়া যাইবে। ‘জানো, সুবুৱা ছেলেপিলে হবে।” বাড়ীতে ভাড়াটে আসিবার পর ধনঞ্জয় কেমন মুষড়াইয়া গিয়াছে। ক’দিন চুপচাপ শুধু সকলকে দেখিয়া গিয়াছে, মুখে তার একটি কথা শোনা যায় নাই । যশোদার মুখে সুব্রতার সন্তান-সম্ভাবনার খবরটা শুনিয়া এবিষয়ে সে। কিছুই বলে না, অভিমানী বালকের মত নিজের নালিশটা জানাইয়া বসে । “রাজেনকে তুমি অত খাতির কর কোন চাদের-মা ? সুব্রতার নূতন খাপছাড়া অবস্থার সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা দেখিয়া যশোদা আশ্চৰ্য্য হইয়া গেল। কোথায় সে ছিল, কতদূর বিভিন্ন আবেষ্টনীর মধ্যে, হঠাৎ আসিয়া পড়িয়াছে কোথায়। কিন্তু ছোটবড় সব বিষয়ে অনেক ভুল করিলেও এবং নানারকম মুস্কিলে পড়িলেও কখনো তাকে কাবু হইতে দেখা গেল না। নিজেই ভুল সংশোধন করিতে লাগিল, মুস্কিলের আসান করিতে লাগিল । চায়ের সেট আর ওই ধরণের কয়েকটি অভাব মিটানোর জন্য সুব্রতার চুড়ি বিক্রী করার সমস্যা যশোদা সমাধান করিয়া ܪܕܘ