পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৫২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in @良8 মানিক রচনাসমগ্ৰ ‘আমি ? আমি একটু কঁাদি।” এই বলিয়া আনন্দ হাসিয়া যোগ দিল, “মিছিমিছি, মবার কথা কেন বলছেন ? কপালে লেখা না থাকলে কেউ মরে না।” ‘কপালে লেখা আছে কি নেই কি করে জানলে ?” একটু ভাবিয আনন্দ আশ্চৰ্য্য হইয়া গেল,-“ঠিক তো!" ঝাবনার পবিষ্কার অংশে তাহাবা নামিয়াছিল, কিছুদূব হাঁটিবার পব ঝোপ জঙ্গল আবিস্ত হইল, আর খানিক দূরে গাছেব ডালে আবি লতায় ঝরনাকে ঢাকিয়া দিযাছে। “আব্ব গিয়ে কাজ নেই আনন্দ ।” আরও! ওব মধ্যে নিশ্চয় ভূত আছে!’ যেখানে নামি যাছিল। সেইখানে তাহারা ফিবিয়া আসিল। উপবে উঠিয়া আনন্দ বলিল, “উঃ, পায্যে কঁাটা ফুটল!” “দেখি ?” আনন্দ কঁাকবেব উপর বসিলে দেশলাই জ্বালিযা হেরম্ব তাহাব পায্যে কঁাটা খুঁজিতে লাগিল। আনন্দকে স্পর্শ কাবামাত্র তাহান সৰ্ব্বাঙ্গ বোমাঞ্চিত হইয়া উঠিল। [পাণ্ডুলিপি দেখে বোঝা যায়, পৃষ্ঠাটি অষ্টম পরিচ্ছেদের শেষ পাতা। নবম পরিচ্ছেদ বেলা সাতটাব আগে হেবম্বের ঘুম ভাঙ্গিল না। তাহাব ঘুম কেহ ভাঙ্গাইয়াও দিল না। বঁচিব গাড়ী চলিযা গিয়াছে। চোখ মেলিবার আগেই হোবস্য টেব পাইল লোকজন অনেক আসিয়া জুটিযাছে। এবং বীতিমত লোদ উঠিয়াছে। নিৰ্ব্বপিত ধুনীব সামনে মাতাজী ব্যাঘ্ৰ চৰ্ম্মে আসীনা, পুণ্যস্তিমিত দুই আঁখি, মুখে অভয়-হাসা। সম্মুখে অৰ্দ্ধচক্রাকালে উপনিষ্ট কুড়ি বাইশটি নরনাবী। আনন্দ সেই পাথরটাতে চুপচাপ বসিয়া আছে। সে নিবেদিত সূৰ্যকে দেখিতেছে না। মাতাজীর ছাঁই ও মাদুলি বিতরণ দেখিতেছে বুঝিবাব উপায় নাই। হেরম্বকে উঠিয়া বসিতে দেখিয়া আনন্দ তাড়াতাডি কাছে আসিল। চুপিচুপি বলিল, “আপনি ম্যাব ভক্ত। সকলের আগে মাকে সাষ্টাঙ্গ প্ৰণাম করুন।' “যদি না করি ?” “মা ভীষণ রাগ কবলে।’ “এখনি প্ৰণাম কবব ?” ‘হঁা। ভোবে উঠেই গুবুমাকে প্ৰণাম করতে হয়।” “বোজ ?’ ‘লোকজন থাকলে রোজ, নইলে ইচ্ছা হল করলেন, ইচ্ছা না হল না। কবলেন, কিছু আসে যায না।” ‘ই’ বলিয়া উঠিযা গিয়া হেরম্ব মাতাজীব পায়ের কাছে উপুব হইয়া পড়িল। মাতাজী মধুব কণ্ঠে বুলিলেন, ‘শুভ হােক। একরাত্রির সাধনার শ্রমেই বেলা পৰ্যন্ত ঘুমোলি বাবা ? যাক যাক, যেতে দে, ক্ৰমে সহ্য হবে। বেদেব চতুর্থ অধ্যায়টা আজ শেষ করতে হবে বাবা।” বেদেব চতুর্থ অধ্যায আছে নাকি? হে বসু সোজা হইয়া বলিল, “যেমন আজ্ঞা কবেন।” ভক্তমণ্ডলীর দিকে চাহিয়া মাতাজী বলিলেন, ‘বড় সুধীর, বড় ভক্তিমান। অল্পদিনে সাধনমার্গে অনেকদূব এগিযে যাবে।” বৰ্ষীয়সী এক বমণী কহিল, ‘পাঁচটা পাশ করা ছেলে! কোন ভাগিামানীর বুক পুড়িয়ে নবীন সন্ন্যোসী হ৩ে এসেছে কে জানে মা ।” E 0BDB DDD DBB S একটি যুবতী বধু পরপরুষকে এতটুকু লজ্জা না করিয়া ছয়মাসেব এক কৃষ্টপুষ্ট শিশুকে হেরম্বেব পায়েব কাছে শোয়াইয়া দিয়া ডুকরাইয়া কঁদিয়া উঠিল। তাহার দুটি ছেলে হইয়াছিল, একবছরেব বেশী বঁচে নাই। এই ছেলেটির জীবিত অবস্থাতেও সে তাই প্রতিনিয়ত তিন পুত্রের পুত্ৰশোক ভোগ করিতেছে—এতো মরিল বলিয়া। এখন, সাধু সন্নাসীর আশীৰ্ব্বাদ কুড়াইয়া যদি বাঁচে।