পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in o মানিক রচনাসমগ্র যথাসাধা সাহায্য করা আমাদেব উচিত বইকী, এ মাসে পারব না, সামনের মাসে কিছু টাকা তোমায় পাঠিযে দেব। কিছু টাকা কত টাকা ? কুডি। সেদিন বোধ হয়। চৈত্র মাসেব সাত তাবিখ। বাডিতে মেছুনি আসিয়াছিল। একপোয়া মাছ বাখিয়া পয়সা আনিতে গিয়া শ্যামা দেখিল দুটি পয়সা মোটে তাহার আছে। বাকসো-পাটবা হাতড়াইয়া কদিন অপ্রত্যাশিতভাবে টাকাটা সিকিটা পাওয়া যাইতেছিল, আজও তেমনি কিছু পাওয়া যাইবে শ্যামা করিযাছিল। এই আশা,—কিন্তু দুটি তামাব পয়সা ছাড়া আর কিছুই সে খুজিয়া পাইল না। মাছেল দু আনা দাম মামাই দিল। শ্যামা বলিল, এমন করে আ!! একটা দিনও তো চলবে না মামা। একটা কিছু উপায় করা ? দুচাবখানা নোট তুমি নিযে এসো সেই টাকা থেকে, তাবপব যা কপালে থাকে হবে। মামা বলিল, টাকা চাই ?--নে না বাবু দু-পাঁচ টাকা আমােবই কাছ থেকে, আমি তো কঙাল নাই ? বলিযা মামা দশটা টাকা শ্যামাকে দিল। মামার তবে টাকা আছে নাকি? লুকাইয়া বাখিয়াছে ? শ্যামা বলিল, দশ টাকাব্য কী হবে মামা ৮ চাদিকে অভাব খ্যাখা কবছে, কোথায ঢালাব এ টাকা ? এখনকাল মতো চালিযে নে মা, ফুরিয়ে গেলে বলিস। আব্ব কটা দাও। খোকাব মাইনে, দুধের দাম—- মামা হাসিয়া বলিল, আৰু কোথায্য পাব ? কিন্তু শ্যামার মানে সন্দেহ ঢুকিয়াছে, কিছু টাকা মামা নিশ্চয় লুকাইয়া রাখিযাছে, এমনি চুপ করিযী। থাকে, অচল হইলে পাঁচ টাকা দশ টাকা বাহিব করে। অবিলম্বে আরও বেশি টাকার প্রয়োজন শ্যামাব ছিল না, তবু মামাব সংগতি আৗচ কবিবােব জন্য সে পীড়াপীড়ি কবিতে লাগিল। মামা শেসে রাগ করিয়া বলিল, বললাম নেই, বিশ্বাস হল না, বুঝি ? দ্যাখগে আমার ব্যাগ খুজে । ব্যােগ মামাব শ্যাম? আগেই খুজিযাছে। দুখানা গেরুয। বসন, একটা গেরুফা আলখাল্লা, কতগুলি বুদ্ৰাক্ষ ও স্ফটিকের মালা, কতগুলো কালো কালো শিকড়, কাঠের একটা কঁকুই, টিনেব ছোটাে একটি আরশি আর এমনি দুটাে চারটে জিনিস মামার সম্বল। পয়সাকডি ব্যাগে কিছুই নাই। তবু মামার যে টাকা নাই শ্যামা তাহা পুৰাপুরি বিশ্বাস করিতে পারিল না। দশটা টাকা যে কোথা দিয়া শেষ হইয়া গেল শ্যামা টেরও পাইল না। মামার কাছে হাত পাতিলে এবার মামা সঙেগ সঙ্গে টাকা বাহির করিয়া দিল না, বকিতে বকিতে বাহিব হইয়া গিযা একবেলা পবে। আবার দশ টাকার একটা নোট আনিয়া দিল। শ্যামার প্রশ্নের জবাবে বলিল, শিষ্য দিযাছে। চৈত্র মাসের মাঝামাঝি ইংরাজি মাস কাবাব হইলে একদিন সকালে শ্যামা বাণীকে জবাব দিল। রাণীকে সে দুমাস আগেই ছাড়াইয়া দিতে চাহিয়াছিল, ঝি রাখিবাব সামর্থ্য তাহাব কোথায়?--মামার জন্য পারে নাই। মামা বলিয়াছিল, বডে, তুই ব্যস্তবাগীশ শ্যামা, এত খরচের মধ্যে একটা ঝির মাইনে তুই দিতে পারবি নে, কত আর মাইনে ওর? আগে আচল হােক তখন ছাড়াস, এক-একা তুই খেটেখেটে। মরবি আমি তা দেখতে পারব না। শ্যামা। এবার মামাকে জিজ্ঞাসা না করিয়াই রাণীকে শ্যামা কি হয় মা! এতগুলো ছেলেমেয়ে, একা তুই পারবি কেন? ও সব বুদ্ধি করিসনে, এমনি যদি খরচ চলে একটা ঝির খরচও চলবে। আমি ওর মাইনে দেবখন যা। সকালে মামা নিজে গিয়া রাণীকে ডাকিয়া আনিল। ললিল, এমনি তো কাজের অন্ত নেই, বাসনমাজ ঘর-ধোয়াব কাজও যদি তোকে করতে হয় শ্যামা, ছেলেমেয়ের মুখের দিকে কে তাকাবে লো,