পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So প্ৰাক-শারদীয় कष्ट्रिी মাসের মেয়েটাকে বুকে নিয়ে এবং নবীর হাত ধরে নব’র মাকে এক গাঁয়ে ফিরতে দেখে সারা গায়ে যেন শিহরণ বিয়ে যায়।

মাগো মা নবীর মা, গলায় দড়ি তবে দিসনি তুই!
কি বলছ পাগলীর মত, গলায় দড়ি দিতে যাবো কেন গা ? ; একলাটি ফিরে এলি ? :: এসবো নি ? জ্বরে মানুষটাকে কাতর দেখে গেছি, ভাইরা কেউ দিতে এসবে নি, দু’চারদিন না গেলে কারু সময় হবে নি কো। নিজেই এলাম। মানুষটা বেঁচেবতে’ আছে ত সত্যি ?

পয়সা-কড়ি কিছু বোধ হয় বাগিয়ে-টাগিয়ে এসেছে নব’র মা বাপের বাড়ি বোনের বিয়েতে নিয়মরক্ষা করতে গিয়ে-দুপুরে গায়ে ফিরে বিকেলেই সে শঙ্কর ডাক্তারকে ঘরে ডেকে পাঠায়। নগদ আগাম একটাক দক্ষিণ দিয়ে ! দেড়টাকা দিয়ে স্বচ্ছ শিশিতে ছ’দাগ লালিম কুইনিন। মিকশ্চারও আনায়। শঙ্কর ছিল গায়ের সেরা লম্পট আর বিবাগী বাদ ছেলে । তার পিছনে অবশ্য ছিল বয়স্ক একজন বজাত । তার একটা বজাতিতে জড়িয়ে পড়ে শঙ্কর দু’মাস জেলে গিয়েছিল। জেলে কয়েকটা অসুখে ভুগে মোট-মাট কয়েক মাস হাসপাতালে থেকে রোগ ব্যারাম চিকিৎসা সম্পর্কে তার জ্ঞান জন্মেছিল অথবা বাড়িতে দু’একটা ডাক্তারি বই আর পঞ্জিকার বিজ্ঞাপন পড়ে বিদ্যালাভ করে সে বোকা গরিব নিরুপায় মানুষদের চিকিৎসা করার পেশা নিয়েছিল কে জানে । ক’দাগ ওষুধ অনাথের পেটে গিয়েছিল। কেউ বলতে পারবে না। নদেরচাদের বৌ হয়ত বললেও বলতে পারত-নব’র মা নগদ পয়সা দিয়ে ডাক্তার আনিয়েছে, ওষুধ আনিয়েছে, খবর শুনে সে একটু বেশী রাত্রে ধার চেয়ে, ভিক্ষা চেয়ে, কয়েক আনা পয়সা আদায়ের চেষ্টা করতে গিয়েছিল। কথার ছলে দরদ দেখাতে সে কি আর জিজ্ঞাসা করেনি যে ডাক্তার কি বলেছে, অনাথ ক’দাগ ওষুধ খেয়েছে এবং ইতিমধ্যেই ওষুধে কাজ হবার কি লক্ষণ দেখা গেছে ? কিন্তু ঘরে আর ফিরতে পারল কই নদেরচাদের বৌ! পাগলা নদীর কঁচা বঁধ-ভাঙা মানুষ-সমান উঁচু ঢিল প্ৰচণ্ড গর্জনে ছুটে এসে খড়কুটোর মতই তাকে কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে গেল। কেউ জানে না ! O afir RCMPC, o