পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবেক RSd স্থির নিশ্চল না হইয়াও মানুষের জ্ঞান যে লোপ পাইতে পারে অত কি ঘনশ্যাম জানিত । ‘চেষ্টা প্ৰাণপণে করিতে হইবে। তবে এখন সব ভগবানের হাতে।” ডাক্তারও ভগবানের দোহাই দেয়। এতদিন সব ডাক্তারের হাতে ছিল, এখন ভগবানের হাতে চলিয়া গিয়াছে। নিখিল ডাক্তার চলিয়া গেলে বাহিরের ঘরে বসিয়াই ঘনশ্যাম চিন্তাগুলি গুছাইবার চেষ্টা করে। কালও মণিমালার মৃত্যু প্ৰায় নিশ্চিত ছিল, ডাক্তারের এ কথায় তার কিছুতেই বিশ্বাস হইতে চায় না। শেষরাত্ৰে নাড়ী ছাড়িয়া একরকম মরিয়া গিয়াও মণিমালা। তবে বঁচিয়া উঠিল কেন ? তখন ত শেষ হইয়া যাইতে পারিত। মণিমালার মরণ নিশ্চিত হইয়াছে আজ সকালে। ডাক্তার বুঝিতে পারে নাই, এখনকার অবস্থা দেখিয়া আন্দাজে ভুল অনুমান করিয়াছে। ঘনশ্যাম যখন অশ্বিনীর ঘড়িটা চুরি করিয়াছিল, তার জীবনে প্রথম চুরি, তখন মণিমালা চিকিৎসার বাহিরে চলিয়া গিয়াছিল। ওর চিকিৎসার জন্য সে পাপ করিয়াছে কিনা, ওর চিকিৎসা তাই হইয়া গিয়াছে নিরর্থক। সকালে বাড়ি হইতে বাহির হওয়ার আগে নিখিল ডাক্তারকে আনিয়া সে যদি মণিমালাকে দেখাইত, নিখিল ডাক্তার নিশ্চয় অন্য কথা বলিত । ঘড়িটা ফিরাইয়া দিবে ? খুব সহজেই তা পারা যায়। এখনো হয়ত জানাজানিও হয় নাই। কোন এক ছুতায় অশ্বিনীর বাডি গিয়া এক ফঁাকে টেবিলের উপর ঘড়িটা রাখিয়া দিলেই হইল। আর কিছু না হোক, মনের মধ্যে এই যে তার পীড়ন চলিতেছে আতঙ্ক ও উদ্বেগের, তার হাত হইতে সে ত মুক্তি পাইবে। যাই সে ভাবুক, অশ্বিনী যে তাকে মনে মনে সন্দেহ করিবে সে তা সহ্য করিতে পরিবে না। এই কয়েক ঘণ্টা সে কি সহজ যন্ত্রণা ভোগ করিয়াছে! পশুপতি যখন তাকে অশ্বিনীর ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিতে দেখিয়াছিল, তাকে সন্দেহ করার সম্ভাবনা যখন আছে অশ্বিনীর, ঘড়িটা রাখিয়া আসাই ভাল। এমনই অশ্বিনী তাকে যেরকম অবজ্ঞা করে গরিব বলিয়া, অপদাৰ্থ বলিয়া, তার উপর চোর বলিয়া সন্দেহ করিলে না জানি কি ঘূণাটাই সে তাকে করিবে ! কাজ নাই তার তুচ্ছ একটা সোনার ঘড়িতে। টাকাও তার আছে। পচিশ টাকা । ভিতরে গিয়া মণিমালাকে একবার দেখিয়া আসিয়া ঘনশ্যাম বাহির হইয়া পড়িল। ট্রাম রাস্তা ধরিয়া কিছুদূর আগাইয়া সে শ্ৰীনিবাসের মনিব্যাগটা বাহির o स्व-निर्दफ्रिङ १छ o