পাতা:মুক্তধারা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সে একেবারে আস্ত একখানি মানুষ— ভিড়ের মধ্যে তাকে খুঁটে বের করতে হয় না— সবাইকে ঠেলে দেখা দেয়। দাদা, তোমার ঐ ঝুড়িটার মধ্যে বোধ করি বাতি অনেকগুলো আছে, একখানা দাও-না। ঘরের লোকের চেয়ে রাস্তার লোকের আলোর দরকার বেশি।

 নিমকু। দাম কত দেবে?

 হুব্বা। দামই যদি দিতে পারতুম তবে তো তোমার সঙ্গে হেঁকে কথা কইতুম, মিঠে সুর বের করব কেন?

নিমকু। রসিক বট হে।

প্রস্থান

 হুব্বা। বাতি দিলে না, কিন্তু রসিক বলে চিনে নিলে। সেটা কম কথা নয়। রসিকের গুণ এই, ঘোর অন্ধকারেও তাকে চেনা যায়। উঃ, ঝিঁঝির ডাকে আকাশটার গা ঝিম্‌ঝিম্ করছে। নাঃ বাতিওয়ালার সঙ্গে রসিকতা না করে ডাকাতি করলে কাজে লাগত।

আর-একজন পথিকের প্রবেশ

 পথিক। হেইয়ো!

 হুব্বা। বাবা রে, চমকিয়ে দাও কেন?

 পথিক। এখন চলো!

 হুব্বা। চলব বলেই তো বেরিয়েছিলুম। দলের লোককে ছাড়িয়ে চলতে গিয়ে কি রকম অচল হয়ে পড়তে হয় সেই তত্ত্বটা মনে মনে হজম করবার চেষ্টা করছি।

 পথিক। দলের লোক তৈরি আছে, এখন তুমি গিয়ে জুটলেই হবে।

 হুব্বা। কথাটা কী বললে? আমরা তিন মোহনার লোক, আমাদের একটা বদ অভ্যেস আছে—পষ্ট কথা না হলে বুঝতেই পারি নে। দলের

৬৯