পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(8 যুগান্তর কিন্তু ধৰ্ম্মালোচনা সভাতেই কৃষ্ণকামিনীর প্রকৃতির সর্বশ্রেষ্ঠ ভাগ প্ৰকাশ পাইত। তিনি যখন ভক্তিভাবে ঈশ্বরের গুণকীৰ্ত্তন শুনিতে বসিতেন, তখন তাহার বিনীত, পবিত্র ও প্রেমোজ্জল মুখেয় প্রতি দৃষ্টিপাত করিলে অতি পাষণ্ডেরও মনে ভক্তিরসের সঞ্চার হইত। বাগচী মহাশয় যখন ভক্তিত্বত্ত্বের গান সকল করিতেন, তখন কৃষ্ণকামিনীর বিমল মুখমণ্ডলের উপরে দর দর ধারে ভক্তি-আশ্র প্রবাহিত হইত। তাহা দেখিয়া বাগচী মহাশয় এতই মুগ্ধ হইয়াছিলেন, যে কৃষ্ণকামিনীকে মধ্যে মধ্যে বলিতেন, “মা তুমি সাক্ষাৎ মীরাবাই, তুমি আর জন্মে মীরা ছিলো।” একদিন নবান বাগচী মহাশয়কে বললেন,-“আপনার পুত্রবধূ বেশ গাইতে পারেন, আপনি বুঝি তা জানেন না ? আপনাকে একটু গেয়ে শোনাবার জন্যে কত বলি, তা উনি কিছুতেই গাবেন না, বড় লজ্জা ।” বাগচী মহাশয় । ভগবানের নাম করবে তাতে লজ্জা কি মা ? এদেশের মেয়েরা বিবাহের সময় কত গান করে, তাতে লজ্জা হয় না, তুমি পরমেশ্বরের মহিমা কীৰ্ত্তন করবে তাতে লজ্জা ? কৃষ্ণকামিনী । ওর কথা। আপনি শোনেন কেন ? আমি গাইতে জানি না, পঞ্চ বাবুর গান শুনে শুনে এক আধটু শিখেছি। বাগচী মহাশয়। আচ্ছা, তাই একটু গাও দেখি ? নবীনচন্দ্র এবং বাগচী মহাশয় দুইজনে অনেক অনুরোধ করিতে করিতে কৃষ্ণকামিনী অতিশয় সঙ্কুচিত ভাবে, ভক্তির সহিত একটী সঙ্গীত গাইলেন। শুনিয়া বাগচী মহাশয় শত শত ধন্যবাদ করিতে লাগিলেন। । তৎপরে এই স্থির হইল যে, বাগচী মহাশয় সপ্তাহে দুই দিন আসিয়া তঁহাকে ভক্তি তত্ত্বের সঙ্গীত সকল শিখাইবেন । সেইরূপ বন্দোবস্তে কাৰ্য্য চলিল। এইরূপ এক প্রকার সুখেই তঁহাদের দিন কাটিয়া