পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 রবীন্দ্র-রচনাবলী মন্দং নিধেহিচরণীে পরিধেহি। নীলং বাসঃ পিধেহি। বলয়াবলিমাঞ্চলেন । মা জল্প সাহসিনি শারদচন্দ্ৰকান্তদন্তাংশবিস্তব তমাংসি সমাপিয়ন্তি । ধীরে ধীরে চলো তখী, পরো নীলাম্বর, অঞ্চলে বাধিয়া রাখো কঙ্কণ মুখর। কথাটি কোয়ো না, তব দন্ত-অংশু-রুচি পথের তিমিররাশি পাছে ফেলে মুছি। শ্ৰীশ । রসিকবাবু, আপনার বুলি যে একেবারে ভরা। এমন কত তৰ্জমা করে রেখেছেন । রসিক । বিস্তর । লক্ষ্মী তো এলেন না, কেবল বাণীকে নিয়েই দিন যাপন করছি । শ্ৰীশ । ওহে বিপিন, অভিসার-ব্যাপারটা কল্পনা করতে বেশ লাগে । বিপিন । ওটা পুনর্বার চালাবার জন্যে চিরকুমার-সভায় একটা প্ৰস্তাব এনে দেখো-না । শ্ৰীশ । কতকগুলো জিনিস আছে যার আইডিয়ােটা এত সুন্দর যে সংসারে সেটা চালাতে সাহস হয় না । যে রাস্তায় অভিসার হতে পারে, যেখানে কামিনীদের হার থেকে মুক্তো ছিড়ে ছড়িয়ে পড়ে, সে রাস্তা কি তোমার পটলডাঙা স্ট্রীট ? সে রাস্তা জগতে কোথাও নেই। বিরাহিণীর হৃদয় নীলাম্বরী পরে মনোরাজ্যের পথে ঐরকম করে বেরিয়ে থাকে- বক্ষের উপর থেকে মুক্তো ছিড়ে পড়ে, চেয়েও দেখে না- সত্যিকার মুক্তো হলে কুড়িয়ে নিত। কী বলেন রসিকবাবু। রসিক । সে কথা মানতেই হয়- অভিসারটা মনে মনেই ভালো, গাড়িঘোড়ার রাস্তায় অত্যন্ত বেমানান । আশীৰ্বাদ করি শ্ৰীশবাবু, এইরকম বসন্তের জ্যোৎসারাত্রে কোনো-একটি জালনা থেকে কোনো-এক রমণীর ব্যাকুল হৃদয় তোমার বাসার দিকে যেন অভিসারে যাত্রা করে । শ্ৰীশ । তা করবে রসিকবাবু, আপনার আশীৰ্বাদ ফলবে । আজকের হাওয়াতে সেই খবরটা আমি মনে মনে পাচ্ছি। বিশে-ডাকাত যেমন খবর দিয়ে ডাকাতি করত। আমার অজানা অভিসারিকা তেমনই পূর্বে হতেই আমাকে অভিসারের খবর পাঠিয়েছে। বিপিন । তোমার সেই ছাতের বারান্দাটা সাজিয়ে প্ৰস্তুত হয়ে থেকে । শ্ৰীশ । তা আমার সেই দক্ষিণের বারান্দায় একটি চৌকিতে আমি বসি, আর-একটি চৌকি সাজানো থাকে । বিপিন । সেটাতে আমি এসে বসি । শ্ৰীশ । মধ্যবভাবে গুড়ং দদ্যাৎ, অভাবপক্ষে তোমাকে নিয়ে চলে । বিপিন । মধুময়ী যখন আসবেন তখন হতভাগার ভাগ্যে লগুড়ং দদ্যাৎ । রসিক । (জন্যান্তিকে) শ্ৰীশবাবু, আপনার সেই দক্ষিণের ছাতটিকে চিহ্নিত করে রাখবার জন্যে যে পতাকা ওড়ানো আবশ্যক সেটা যে ফেলে এলেন । শ্ৰীশ । রুমালটা কি এখন চেষ্টা করলে পাওয়া যেতে পারবে ? রাসিক । চেষ্টা করতে দোষ কী । শ্ৰীশ । বিপিন, তুমি ভাই রসিকবাবুর সঙ্গে একটু কথাবার্তা কও, আমি চট্ট করে আসছি। [প্ৰস্থান বিপিন । আচ্ছা রসিকবাবু, রাগ করবেন নারসিক। যদি বা করি আপনার ভয় করবার কোনো কারণ নেই, আমি ভারি দুর্বল। বিপিন । দু-একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করব, আপনি বিরক্ত হবেন না। রাসিক । আমার বয়স সম্বন্ধে কোনো প্রশ্ন নয় তো ? दिन्मि ! ब्ा ।