পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী গাঙচিল উড়ে বেড়াচ্ছে - মাছধরা জালের উপরকার আকাশে । মাছরাঙা স্তব্ধ বসে আছে বঁাশের খোটায়, তার স্থির ছায়া নিস্তরঙ্গ জলে । ভিজে বাতাসে শুাওলার ঘন স্নিগ্ধগন্ধ । চারদিক থেকে অস্তিত্বের এই ধারা নানা শাখায় বইছে দিনেরণত্রে । অতি পুরাতন প্রাণের বহুদিনের নান। পণ্য নিয়ে এই সহজ প্রবাহ,— মানব-ইতিহাসের নূতন নূতন ভাঙনগড়নের উপর দিয়ে এর নিত্য যাওয়৷ আসা । চঞ্চল বসস্তের অবসানে আজি আমি অলস মনে আকণ্ঠ ডুব দেব এই ধারার গভীরে ; এর কলধ্বনি বাজবে আমার বুকের কাছে আমার রক্তের মৃদুতালের ছন্দে । এর আলো ছায়ার উপর দিয়ে ভাসতে ভাসতে চলে যাক আমার চেতন চিন্তাহীন তর্কহীন শাস্ত্রহীন মৃত্যু-মহাসাগরসংগমে । পাচ বর্ষা নেমেছে প্রাস্তরে অনিমন্ত্রণে ; ঘনিয়েছে সার-বাধা তালের চুড়ায়, রোমাঞ্চ দিয়েছে বাধের কালো জলে । বর্ষ নামে হৃদয়ের দিগন্তে যখন পারি তাকে আহবান করতে ।